ফেনীতে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশিয় অস্ত্রসহ আটক যুবলীগ-ছাত্রলীগের ২৬ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার বিকেলে ফেনীর আমলি আদালতের বিচারিক হাকিম এই নির্দেশ দেন।
এর আগে র্যাবের হাতে আটক ওই অস্ত্রধারীদের ফেনী মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেছে র্যাব।
অস্ত্রসহ আটক যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হলো- আবু ইউসুফ (২৫), মহিউদ্দিন (১৯),শরিফুল ইসলাম রিপন (২৬), সালেহ আহম্মদ মিন্টু মেম্বার(৩৫), জামাল উদ্দিন (৪২),মো: শাহাদাত হোসেন (২৪), মো: সারোয়ার হোসেন (২৯), আবুল কাশেম বেসু (৩৬), এনামুল করিম রজিব (২৫), আশরাফুল ইসলাম মাসুম (২৩), ওমর ফারুক (২৪), মো: ফরিদ (৩০), মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম মানিক (২৪), মো: ফারুক হোসেন (৩২), কফিল উদ্দিন সোহেল (২৮), মো: শাহাদাত হোসেন (২৭), একরামুল হক সিফাত (২১) আবু বক্কর সিদ্দিক শুভ(২১), মো: ইমরান হোসেন (২৬), মো: আবদুর রহমান রিন্টু (১৯), আরাফাত হোসেন আসিফ (২৪), মাহবুবুর রহমান জেমী (২৫),মো: হাসান (২২) মো: রবিউল হক লিটন (৩৮), মো; আবু তাহের (৩৫)।
শনিবার রাতে ফেনীর লালপুল এলাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর ‘অনুসারীদের’ গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৩৩টি অস্ত্রসহ ২৬ জনকে আটক করে র্যাব।
শনিবার রাতে এ ঘটনার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়ক ও ফেনী-সোনাগাজী আঞ্চলিক সড়কসহ রেলপথ দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে।
তিনটি গাড়িতে ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৬টি রামদা ও দুটি ‘চাইনিজ কুড়াল’ পাওয়া গেছে বলে র্যাব-৭ এর ফেনী ক্যাম্পের পরিচালক মেজর মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন জানান।
র্যাব ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোনাগাজী উপজেলা যুবলীগ নেতা আজিজুল হককে হত্যার প্রতিবাদে শনিবার বিকালে সোনাগাজী বাজারের জিরো পয়েন্টে একটি প্রতিবাদ সভা হয়।
সমাবেশ শেষে রাত ৮টার দিকে সোনাগাজী থেকে ফেনী ফিরছিলেন নিজাম হাজারীর অনুসারীরা। এ সময় লালপুল এলাকায় র্যাব তাদের তিনটি মাইক্রোবাস আটক করে; কয়েকটি গাড়ি পালিয়ে যায়।
পরে আটক গাড়িগুলোতে তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্রসহ ২৬ জনকে আটক করা হয়।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতা উদ্দিন আহম্মেদ জানান, উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচটি শটগান, চারটি বিদেশি বন্দুক, একটি দুইনলা বন্দুকসহ বিপুল পরিমাণ কার্তুজ ও গুলি রয়েছে।
অস্ত্র আটকের জের ধরে নিজাম হাজারীর অনুসারী আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা র্যাবকে ঘটনাস্থলে কিছুক্ষণ অবরুদ্ধ করে রাখে বলেও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান।
সমর্থকদের আরেকটি দল ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়কসহ তিনটি সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করে।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত ৯টার দিকে মহাসড়কে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এর এক ঘণ্টা পর রাত ১০টার দিকে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। অস্ত্র আটকের পর ফেনী-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী ঘটনাস্থলে গিয়ে র্যাব ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
র্যাব কর্মকর্তা মেজর মোজাম্মেল হোসেন বলেন, “উদ্ধার সব অস্ত্রই অবৈধ।”ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে র্যাব অভিযান চালাবে বলে জানান তিনি।