অর্থ আত্মসাৎ ও তা পাচারের অভিযোগে নাসির গ্রুপের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বিশ্বাসসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে গতকাল নাসির গ্রুপের অনুসন্ধান প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করা হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রফিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। কমিশন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রতিবেদনে যাদের আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা হলেন নাসির গ্রুপের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বিশ্বাস, জিএম (আমদানি) মো: আলফাজ উদ্দিন, জিএম (মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) মো: শামীম আহম্মেদ, জিএম (ফাইন্যান্স ও হিসাব) মো: সিদ্দিকুর রহমান, এজিএম (ক্রয়) মো: মোবাইদুল ইসলাম, ক্যাশিয়ার মো: শামীম, কর্মচারী নিয়াজ বিশ্বাস, এমদাদুল হক, এ জে মানি চেঞ্জারের মালিক সাইদুল ইসলাম, হুন্ডি ব্যবসায়ী মো: ফিরোজ ও তার ছেলে মো: আদিল। দুদক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে নাসির গ্রুপের প্রতিটি ইন্ডাস্ট্রিজের নামে আমদানি করা পণ্যের প্রতিটি এলসির বিপরীতে বিপুল ডলার হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হয়েছে। এই গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রায় ৮০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি ও তা অবৈধভাবে পাচারের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সুইজারল্যান্ড ও হংকংয়ে ৮৫ হাজার ডলার পাচারের প্রমাণ দুদকের কাছে রয়েছে। বাকি টাকা দেশের ভেতরে নীতিবহির্ভূতভাবে লেনদেন করা হয়েছে। এর আগে ১৫ ডিসেম্বর নাসির উদ্দিন বিশ্বাসসহ তার প্রতিষ্ঠানের ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও তারা দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হননি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক মাস সময়ের আবেদন করেছেন। এ ছাড়া গত ফেব্রুয়ারিতে নাসির উদ্দিনের প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ক্রস ওয়ার্ল্ডের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন : প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ক্রস ওয়ার্ল্ড পাওয়ার লিমিটেডের সিনিয়র এক্সিকিউটিভসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে গতকাল কমিশন এ মামলার অনুমোদন দেয়। অভিযুক্তরা হলেন ক্রস ওয়ার্ল্ড পাওয়ার লিমিটেডের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো: ফিরোজ মোল্লা, প্রতিষ্ঠানের বিলিং শাখার সাবেক কর্মকর্তা মো: শরিফুল ইসলাম শরিফ, মিন্টু ইলেকট্রনিকসের মালিক মো: মিন্টু, সিলেটের বাসিন্দা মো: কবিরুল ইসলাম ও ভৈরবের বাসিন্দা আনোয়ার সাদাত। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। দুদক সূত্র জানায়, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ক্রস ওয়ার্ল্ড পাওয়ার লিমিটেডের দুই কোটি ৫১ লাখ ৬৮ হাজার ৮৬৬ টাকা সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রগতি সরণি শাখা থেকে উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করেন; যা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন স্থানান্তর ও রূপান্তর হয়। দুদকের উপপরিচালক হামিদুল হাসান এ অভিযোগ অনুসন্ধান করেন।