জাতীয় পার্টির এরশাদ ঘোষিত রংপুর মহানগর কমিটির সদস্য সচিব এসএম ইয়াসিরের ওপর হামলার জের ধরে জাতীয় পার্টির কার্যালয় দখল করে নিয়েছে এরশাদ সমর্থিতরা। পরে তারা নগরীতে মিছিল নিয়ে কোতোয়ালি থানা ঘেরাও করে। কার্যালয় দখলে নিল এরশাদ সমর্থকরা মঙ্গলবার রাতের দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব এসএম ইয়াসির বাংলামেইলকে জানান, রাত সোয়া ১১টার দিকে বাড়ির যাওয়ার সময় মিঠু হোটেলের গলিতে ৪টি মোটরসাইকেলে কয়েকজন মুখোশধারী সন্ত্রাসী তার পথরোধ করে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এবং জেলা সদস্য সচিব এইচএম শাহরিয়ার আসিফের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে রাত পৌনে ১২টায় সেন্ট্রাল রোডস্থ জাতীয় পার্টি কার্যালয় দখলে নেয়। এ সময় আশেপাশে প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গা সমর্থিত কিছু নেতাকর্মী থাকলেও তারা সটকে পড়ে। পার্টি কার্যালয়ে ঢুকে এরশাদ সমর্থিত নেতাকর্মীরা পার্টি অফিস ও এর আশেপাশে মসিউর রহমান রাঙ্গার ছবি সংবলিত সাটানো সব পোস্টার, ব্যানার ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে। পরে তারা পার্টি অফিসের খোলামাঠে চেয়ার নিয়ে গোল হয়ে বসে থাকে। এক পর্যায়ে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে যোগ দেন মহানগর কমিটির আহত সদস্য সচিব এসএম ইয়াসির। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে আসিফ, মোস্তফা ও ইয়াসিরের নেতৃত্বে পার্টি অফিস থেকে একটি মিছিল বের করে। মিছিলে নেতাকর্মীরা রাঙ্গার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। মিছিলটি সুপার মার্কেট মোড় হয়ে কোতয়ালি থানা ঘেরাও করে। এ সময় নেতাকর্মীরা ইয়াসিরের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। পরে বিষয়টি নিয়ে তারা ওসির সঙ্গে কথা বলেন। কার্যালয় দখলে নিল এরশাদ সমর্থকরা মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বাংলামেইলকে জানান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম এবং রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটি থেকে অব্যাহতি পাওয়া মসিউর রহমান রাঙ্গার নেতৃত্বে এবং তার হুকুমে ক্রসফায়ার তালিকাভুক্ত এবং বিভিন্ন চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এরশাদ সমর্থিত জেলা ও মহানগর কমিটির নেতাদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। তারই ধারবাহিকতায় ইয়াসিরের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে তিনি বলেন, এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা পার্টি অফিস রাঙ্গার সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করে রাঙ্গার সমস্ত ছবি, সাইনবোর্ড ও পোস্টার সরিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন সন্ত্রাসী রাঙ্গাকে মন্ত্রীসভা থেকে সরিয়ে দিন। নইলে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে।’ এছাড়াও তিনি এরশাদের কাছে রাঙ্গার জাতীয় পার্টি থেকে প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও বহিষ্কারের দাবি জানান। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী বাংলামেইলকে জানান, জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীরা থানায় এসেছেন। ইয়াসিরের ওপর হামলার ঘটনায় তারা এজহার দায়ের করছেন। এরপরই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।