বিদেশে পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা নেন চান মিয়া (৪৫)। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ায় টাকা ফেরত চেয়ে চানকে চাপ দেন পাওনাদারেরা। এ অবস্থায় গা-ঢাকা দেন তিনি।
এরই মধ্যে পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রতিবেশী একটি পরিবারের লোকজন চানকে ‘গুম’ করে ফেলেছে বলে তাঁর স্ত্রী সামিয়া আক্তার আদালতে মামলা করেন। বিদেশে পালানোর প্রস্তুতিকালে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় গুম হয়ে যাওয়া চানকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায়। চান মিয়ার বাড়ি উপজেলার রাউত্গাঁও ইউনিয়নের নর্ত্তন গ্রামে।
পুলিশের ভাষ্য, চান কাতারে থাকতেন। বছর খানেক আগে দেশে ফেরেন তিনি। তাঁর স্ত্রী সামিয়া বাদী হয়ে গত ১ মে মৌলভীবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা করেন। আরজিতে বলা হয়, নর্ত্তন গ্রামের ফারুক মিয়ার পরিবারের সঙ্গে তাঁদের পূর্বশত্রুতা রয়েছে। এর জের ধরে গত ২৪ এপ্রিল রাতে চানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুম করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পাওয়ায় তিনি মামলা করেছেন। এ ঘটনায় ফারুক, তাঁর ভাই আতিকুর রহমান ও আতিকুরের স্ত্রী রাশেদা বেগমকে আসামি করা হয়। ১ মে মামলাটিকে থানায় এজাহার হিসেবে তালিকাভুক্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিনয় ভূষণ রায় আজ শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চান মিয়া গোপনে কাতারে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি ভিসাও করে ফেলেছেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে সিলেট নগরের শাহজালাল উপশহর এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।’
এসআই বিনয় ভূষণ রায় আরও বলেন, কাতারে পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন এলাকার সাত-আটজন ব্যক্তির কাছ চান টাকা নেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে চান সেটা স্বীকারও করেছেন। তবে টাকার সঠিক পরিমাণ জানা যায়নি। পাওনাদারদের চাপে তিনি প্রথমে ভারতে গিয়ে আত্মগোপন করেন। সম্প্রতি সেখান থেকে দেশে ফিরে আসেন। এরপর আবার কাতারে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন তিনি। জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য চানকে সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠানো হবে।
মিথ্যা তথ্য দিয়ে লোকজনকে হয়রানির অভিযোগে চানের স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
থানায় থাকা চান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘দারোগা স্যারে (তদন্ত কর্মকর্তা) তো সব বলছেন। এইটাই সঠিক। আমি আর কী বলব!’
বক্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করে চানের স্ত্রী সামিয়ার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।