আমি দোষী হলেও আমার সর্বোচ্চ বিচার হোক; ইলিয়াস মোল্লা

0
96
Print Friendly, PDF & Email

রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মিরপুরের কালশীতে ১০ অবাঙালি পুড়ে মরার ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন পল্লবীর সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা। তিনি বলেন, “আমি কিঞ্চিত দোষী হলেও আমার সর্বোচ্চ বিচার হোক। সবাই তদন্ত কমিটিতে সহযোগিতা করুন। আমি দোষী তা প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবো।তার বিরুদ্ধে গরুর রচনা তৈরি করা হচ্ছে উল্লেখ করে ইলিয়াস মোল্লা বলেন, “আমি একটি ঘর বা এক শতাংশ জমিও দখল করেছি, এমনটি কেউ প্রমাণ করতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো। আমার যা সম্পত্তি আছে তাদের সবাইকে দিয়ে দেবো।”

তিনি দাবি করেন, এই ঘটনা নিয়ে একটি কুচক্রী মহল রাজনৈতিক ফয়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।

ইলিয়াস মোল্লা বলেন, “অবাঙালিরা আমাকে ভালোবাসে। আমার ডাকে শত শত অবাঙালি ছুটে আসবে।”

মোল্লা তার পারিবারিক সম্পদ ও সম্পত্তির কথা তুলে ধরেন সাংবাদিকদের বলেন, “আইয়ূব খান বলেছিলেন, আমার বাবা মিরপুরের ল্যান্ডলর্ড। এখনো যা সম্পদ সম্পত্তি রয়েছে, তাতে একশ বছর খেলেও ফুরোবে না। আমার বাবা যখন পুরান ঢাকা ঢুকতের তখন লোকজন বলতেন মিরপুরের রাজা ঢুকছেন।

ঘটনা কীভাবে ঘটেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অবাঙালিদের মধ্যে দু’টি গ্রুপ ছিল, তার সঙ্গে বাঙালিরা মিলেছে তাদের সঙ্গে। গত ৪২ বছরেও এমন আতশবাজির ঘটনা ঘটেনি। যে বাড়িটিতে ১০ জন মারা গেছে, তাদের ঘরের কাছে কাগজপত্র এবং টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ছেটানো হয়েছে। এ থেকেই আগুন তাদের ঘরে লাগতে পারে।”

এ প্রসঙ্গে ইলিয়াস মোল্লা আরো বলেন, “অবাঙালি ক্যাম্পে ৮/৯ দিন ধরে বিদ্যুৎ ছিল না। আমাকে অবহিত করা হয়নি। বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় তারা রাস্তা অবরোধ করেছিল। জানার পর আমি সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করি।”

ঘটনার সময় তিনি বাসায় ঘুমাচ্ছিলেন উল্লেখ করে বলেন, “আমি সারারাত জেগে সকালে ঘুমিয়ে পড়ি। দুপুর সোয়া ১২টায় উঠে জানতে পারি ঘটনার কথা। তারপর আমি ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেই। নিহত পরিবারের সাবিনা বেগমের হাতে এক লাখ টাকাও দিয়েছি, তাদের ঘরে-বাড়ি ঠিক করার জন্য।

কালশীর ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে কোনো এমন প্রশ্নের জবাবে ইলিয়াস মোল্লা বলেন, “গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যারা আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল তারা অভিযোগ তুলেছেন।

ইলিয়াস মোল্লা সাংবাদিকের বলেন, “তারা আওয়ামী লীগের নয়। বিগত ১৯৯১ সালে ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন। ১৯৯৬ সালে কামাল মজুমদারের বিরুদ্ধেও নির্বাচন করেছে। ২০০৮ সালে তারা না ভোট দিয়েছে। গত নির্বাচনে আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা আওয়ামী লীগকে বেছে আর না খেতে পারে এর জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করি।

ইলিয়াস মোল্লা বলেন, “ঘটনার দুই দিন পর থেকে রাজনৈতিক উস্কানি চলছে। আন্দোলনে কিছু কিছু লোক টাকা দিচ্ছেন। হোটেল রাব্বনী থেকে আন্দোলনকারীদের খাবারও দিচ্ছেন।” হোটেল রাব্বানীর মালিকের ছেলেও সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করেন মোল্লা।

সম্পত্তি দখলের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যে জায়গাটা নিয়ে অভিযোগ সেই জায়গাটি ক্যাম্পের বাইরে। সরকারি জমি দলিল করা হয়েছে। তারা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। তারপরেও আমি তাদের বাড়িতে বাড়িতে গ্যাসের সংযোগের ব্যবস্থা করেছি। আমি দখল করলে তাদের গ্যাস সংযোগ দেবো কোনো?

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তদন্তে প্রমাণিত হবে কে দোষী। যে দোষী প্রমাণিত হবে তার বিচার হবে।”

আওয়ামী লীগ এই ঘটনায় দায়ী নয় উল্লেখ করে ইলিয়াম মোল্লা বলেন, “যাদের বিরুদ্ধ অভিযোগ করা হয়েছে তারা এই এলাকাতেই থাকে না।

প্রসঙ্গত, গত শবেবারাতের পরদিন গত ১৪ জুন সকালে কালশীর অবাঙালি ক্যাম্পের একটি পরিবারে আগুনে পুড়ে ৯জন এবং সহিংসতায় আরো একজনসহ ১০জনের মৃত্যু ঘটে।

শেয়ার করুন