ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি) নির্বাচনের বরাদ্দ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য ৭০০ কোটি ২৫ লাখ টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী ২০১৪-১৫ অর্থবছরের নির্বাচনসহ আনুষঙ্গিকখাতে ব্যয় নির্বাহের লক্ষ্যে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ইসির জন্য এ বাজেট বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করে সরকার।
বাজেট প্রস্তাবে দেখা যায়, উন্নয়ন খাতের চেয়ে অর্ধেকেরও কম বরাদ্দ রাখা হয়েছে অনুন্নয়ন খাতে। উন্নয়নে ৫০৮ কোটি টাকা এবং অনুন্নয়ন খাতে মাত্র ২১৫ কোটি টাকা রাখা হয়েছে।
ইসির অর্থ বিভাগের সিনিয়র সহকারি সচিব এনামুল হক শীর্ষ নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, ইসির আগামী অর্থ বছরের বাজেটে ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিতব্য চট্রগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) নির্বাচনের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে বহুল প্রত্যাশিত বিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য কোন বরাদ্দ রাখেনি ইসি। তাই এ অর্থবছরেও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি) নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা সিটির সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা সেরে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শেষে এ বছর আর ডিসিসি নির্বাচন করার সুযোগ হবে না। কারণ, আগামী জানুয়ারিতে চূড়ান্ত হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করা হবে। সেক্ষেত্রে আগে ভোট করতে চাইলে বিদ্যমান ভোটার তালিকা দিয়েই কাজ সারতে হবে। বাজেটে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় এ নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তারা।
উল্লেখ্য, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির জাতীয় সংসদ, উপজেলাসহ বিভিন্ন উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানে বরাদ্দ ছিল ৯৮৯ কোটি টাকা। এবারের বড় ধরনের কোন নির্বাচন না থাকায় বাজেট কমেছে।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা, আপ্যায়ন ব্যয়, বিভিন্ন নির্বাচনের প্রশিক্ষণ, ভ্রমণভাতা, চিকিৎসাভাতা এবং পরিবহনের জ্বালানিসহ ৪৮ খাতে মোট বরাদ্দ ২১৫ কোটি টাকা। এ খাতে আরো উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ হচ্ছে আইন সংক্রান্ত ব্যয়, দায়িত্ব ভার ভাতা, টিফিনভাতা, মুদ্রণ ও বাঁধাই, গবেষণা ব্যয়, ইউনিফর্ম, প্রচার ও বিজ্ঞাপন, শিক্ষাভাতা, ভোটার তালিকা প্রণয়ন, ব্যালট বাক্স নির্মাণ, সংরক্ষণ ও গুদামজাতকরণ, পরীক্ষা ফি ও এ সংক্রান্ত ব্যয়, মহার্ঘভাতা, বদলি ব্যয়, পানি, টেলিফোন, গ্যাস ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের চাঁদা। এছাড়াও বিভিন্ন উপ-নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার (উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন) নির্বাচনের থোক বরাদ্দ দিয়ে নির্বাচনী ব্যয় ৫০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য চারটি প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫০৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে আইডিয়া প্রকল্প, ইআরসি, এসইএমবি ও সিসিএসএসইডি প্রকল্প উল্লেখযোগ্য। এই প্রকল্পগুলোর সহায়তায় নির্বাচনের সরঞ্জমাদি ক্রয়সহ নানা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণমূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় দশম সংসদের প্রথম বাজেট অধিবেশনে ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।