বিশ্বকাপের ৩২ দল চায় তাদের শুরুটা চমৎকার হোক। কারণ গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে প্রথম ম্যাচে পরাজয় মানেই চাপে পড়ে যাওয়া। যেকোনো দলেই থাকে প্রতিভাবান ফুটবলার। তাদের সর্বাত্মক চেষ্টা থাকে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করা। তবে ডেথ গ্রুপে পড়ে গেলে তা অবশ্যই চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে। প্রতি চার বছর পর অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে আমরা দেখি নামীদামি কোনো দলের বিদায়, তাও আবার প্রথম রাউন্ডে। যেমন ২০১০ বিশ্বকাপে আগের দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও রানার্সআপ ফ্রান্স প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নিয়েছিল। ব্রাজিল বিশ্বকাপেও দেখা যাবে বেশ কয়েকটি দল দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ক্রোয়েশিয়া : ক্রোয়েশিয়ার কোচ হিসেবে নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন নিকো কোভাচ। তবে এ গ্রুপে পড়া ক্রোয়েশিয়া প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হচ্ছে ব্রাজিলের। এই গ্রুপের অন্য দু’টি দল হচ্ছে মেক্সিকো ও ক্যামেরুন। ফলে এই গ্রুপের চারটি দলই শেষ ১৬ তে ওঠার যোগ্য। ক্রোয়েশিয়া অবশ্য ইনজুরির সমস্যায় আছে। তারপর উদ্বোধনী ম্যাচে প্রতিপক্ষ হচ্ছে স্বাগতিক ব্রাজিল, যা তাদের জন্য বড় ধাক্কা। বিশ্বকাপ সূচিতে সেলেকাও ও ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচে ফেবারিট ব্রাজিল। তারা ব্রাজিলকে পরাজিত করার ক্ষমতা রাখে না বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন। কারণ তাদের সেরা ফুটবলার মারিও ম্যানডেজুকিচ নেই। ‘মাস্ট উইন’ ম্যাচে তাপমাত্রা ক্রোয়েশিয়াকে সমস্যায় ফেলতে পারে। কারণ ব্রাজিলের কন্ডিশনে ইউরোপের সেরা দলের একটি ক্রোয়েশিয়ার চেয়ে ক্যামেরুন ও মেক্সিকো সুবিধা বেশি পাবে।
নেদারল্যান্ডস : নেদারল্যান্ডস ২০১২ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ছিল পয়েন্টলেস। তাদের কোচ লুইস ভ্যান গাল সেই বেদনাদায়ক অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি আর চান না। তবে এটা ঠিক যে ব্রাজিল বিশ্বকাপে অরেঞ্জ দলটি সেই একই রক্ষণভাগ নিয়ে মাঠে নামছে।
গ্রুপ ‘বি’তে নেদারল্যান্ডসকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য প্রস্তুত চিলি ও স্পেন। এ ছাড়া অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল হিসেবে আছে অস্ট্রেলিয়া। তারপরও নেদারল্যান্ডস বিশ্বাস করে, তারা প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নিচ্ছে না। এমনকি তারা গ্রুপে সবার নিচে থাকবে তাও মেনে নিতে পারে না। তবে এটা ঠিক যে, তাদের ১৬ তে ওঠা মোটেও নিশ্চিত নয়। গ্রুপ পর্যালোচনা করলে বলা যেতে পারে যে, চিলি যদি বাদ পড়ে তাহলে বিশ্বকাপ আসর তার জৌলুশ হারাবে না। নেদারল্যান্ডস সব আসরে আলোচিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো বিশ্বকাপ জয় করেনি। তবে এবার তারা ব্রাজিলে সবচেয়ে বড় সাফল্য চায়। তবে শুরুটা ভালোভাবে করতে হবে। কিন্তু প্রথম ম্যাচে পরাজিত হলে তাদের স্বপ্ন পূরণ হওয়া অনেকটাই অসম্ভব হয়ে পড়বে।
ইংল্যান্ড : ইংল্যান্ডকে নিয়ে যত আলোচনা হয়, বাস্তবে কিন্তু তার কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না। গত আসরে তারা কোনোক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের সমান পয়েন্ট পেয়ে শেষ ১৬ তে স্থান করে নেয়। গ্রুপে তারা দ্বিতীয় হয়। তবে আলজেরিয়া ও স্লোভেনিয়া দারুণ নৈপুণ্য দেখায়।
থ্রি লায়ন্স কোচ রয় হজসনের তত্ত্বাবধানে অনেক উন্নতি করেছে। তবে বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা তাদের জন্য মোটেও সহজ হবে না। কারণ গ্রুপ ‘ডি’তে আছে ইতালি ও উরুগুয়ের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। এ ছাড়া কোস্টারিকা প্রস্তুত অঘটন ঘটানোর জন্য।
ইংল্যান্ড দলে এবার তারুণ্যের ছড়াছড়ি। তাই দলটি অনভিজ্ঞ। দলে আছে নতুন প্রজন্মের তারকারা। যারা ভালো করার জন্য জান লড়িয়ে দেবে। অনেকেই বলে থাকেন যে, এই তরুণ ফুটবলাররাই চমক দেখাবেন। ব্রাজিলের তাপমাত্রা কিছুটা সুবিধা এনে দেবে উরুগুয়ে ও ইতালিকে। ফলে কঠিন পরীক্ষার মখোমুখি হতে হবে ইংল্যান্ডকে এবং এমনো হতে পারে যে থ্রি লায়ন্সরা তাদের বিশ্বকাপ মিশনের শুরুতেই হোঁচট খেয়ে বিদায় নিতে পারে।