প্রাণঘাতী সার্স ও মার্স ভাইরাস প্রতিরোধক আবিষ্কারের দাবি

0
169
Print Friendly, PDF & Email

করোনা প্রজাতির মার্স ও সার্স ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়বে এ-রকম যৌগ আবিষ্কারের দাবি করেছেন বিজ্ঞানীদের আন্তর্জাতিক একটি দল। শ্বাস-প্রশ্বাস-জনিত এই রোগের এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। মানুষের শ্বাসনালীর উপরের ও নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত করে করোনা প্রজাতির ভাইরাস। ঠা-াজনিত কারণে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার এক-তৃতীয়াংশ ঘটনা ঘটে থাকে। বাদুড়ের শরীর থেকে আসা সার্স বা সিভিয়ার অ্যাকুট রেসপিরেটরি সিনড্রোম ভাইরাস ২০০২ সালে মহামারীর রূপ নিয়েছিল। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮শ’ মানুষ মারা যায়। ২০১২ সালে করোনা ভাইরাসের নতুন রূপটির খোঁজ মেলে সউদি আরবে। মার্স বা মিডল-ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম ভাইরাস নামের এই ভাইরাসটি উটের দেহ থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হয়। মার্স ভাইরাসটি সার্সের চেয়ে মারাত্মক হলেও কম সংক্রমিত হয়। মার্স ভাইরাসে ৬৩৬ জন সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯৩ জন।সুইডেনের গুটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এডওয়ার্ড ট্রিবালা ও বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ভোল্কার থেইলের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল কে-২২ নামের একটি যৌগ আবিষ্কার করেছেন। এই যৌগটি মানুষের শরীরে মার্স ও সার্স ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতায় বাধা তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুর্বল প্রজাতির করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে হাল্কা ঠা-া জাতীয় সমস্যা মোকাবেলায় কে-২২ ভাল কাজ করছে বলে প্রথমে আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। এরপরে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান কে-২২ সার্স ও মার্সের মতো শক্তিশালী করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধেও লড়তে সক্ষম। প্লস প্যাথোজেনস নামের চিকিৎসা বিজ্ঞান সাময়িকীর একটি প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন যে মানুষের শ্বাসনালীর কোষের মধ্যে করোনা ভাইরাসটি বংশবিস্তার করে। ভাইরাসটি কোষের ভিতরে ঢুকে এর কোষ ঝিল্লির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এরপরে এগুলোর কাঠামো পরিবর্তিত করে নিজের চারপাশে শক্ত বেষ্টনী তৈরি করে ভাইরাসটি এর বংশ বিস্তার করতে শুরু করে। তবে এই প্রক্রিয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে কে-২২ যৌগটি করোনা ভাইরাসের কোষ ঝিল্লির নিয়ন্ত্রণ নেয়ায় বাধা দিয়ে থাকে। গবেষণা থেকে পাওয়া ফলাফল থেকে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন যে আক্রান্ত কোষের ঝিল্লিকে ব্যবহারের পর্যায়টি করোনা ভাইরাসের জীবন চক্রের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। সাম্প্রতিক সময়ে সার্স ভাইরাসের কারণে মহামারী ও মার্সের প্রাদুর্ভাবের কারণে দ্রুত পরীক্ষাগারের বাইরে কে-২২ যৌগটি পরীক্ষা করা ও ওষুধ প্রস্তুতির জন্য বিনিয়োগ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। 

শেয়ার করুন