নারায়ণগঞ্জের সাতখুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাবের তিন কর্মকর্তা এখন জেলহাজতে। আর এ ঘটনা র্যাবের ভাবমূর্তিতে ফেলেছে নেতিবাচক প্রভাব। এ অবস্থায় কেউ কেউ র্যাবে সংস্কারের দাবি তুলছেন। এমনকি এই বাহিনী বিলুপ্তির দাবিও আসে কারো কারো কাছ থেকে। এসব আলোচনার মধ্যেই সম্প্রতি র্যাব রাস্তায় টহল না দেওয়া ও চেকপোস্ট না বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ২৬ মে র্যাবের এই সিদ্ধান্তের পর রাজধানীজুড়ে বেড়ে যায় পুলিশের তৎপরতা। শুক্রবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পুলিশি তৎপতার প্রমাণও মেলে।
বিগত দিনে রাতে রাজধানীতে র্যাব সক্রিয় থাকায় পুলিশের তৎপরতা কিছুটা কম ছিল। সেসময় পুলিশের চেকপোস্টও ছিল তুলনামূলক কম।
সরেজমিনে রাজধানীর বিজয় স্মরণী ও মানিক মিয়া এভিনিউতে দেখা যায় পুলিশের চেকপোস্ট। মানিক মিয়া এভিনিউ ঘুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) দিকে যাওয়ার আগে চোখে পড়লো আরেকটি চেকপোস্ট। এখানে দায়িত্বরত পুলিশের কনস্টেল মো: ফরিদ জানালেন, মানিক মিয়া এভিনিউ ও সম্মেলন কেন্দ্রের আগের এই স্পটে আগে কোনো পুলিশি চেকপোস্ট ছিল না। সম্মেলন কেন্দ্রের আগে এখানে র্যাবের একটি চেকপোস্ট ছিল। কয়েকদিন আগে এই দুটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এই কথার সত্যতা স্বীকার করলেন শেরেবাংলা নগর থানার সাব-ইন্সপেক্টর জাহেদুল ইসলাম।
শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে রামপুরা দিয়ে হাতিরঝিলে ঢুকতেই পুলিশি তল্লাশির মুখে পড়লাম। এখানেও যথারীতি তৎপর পুলিশ। চেকপোস্টের প্রধান সাব-ইন্সপেক্টর মাহমুদ জানান, এটি নিয়মিত চেকপোস্ট। রাতে এখানে সব সময়ই পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে থাকে।
র্যাবের টহল ও চেকপোস্ট বন্ধ হওয়াতেই পুলিশ তৎপর হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, র্যাবের কাজ বন্ধ হওয়ার সঙ্গে আমাদের কাজের কোনো সম্পর্ক নেই।
তবে তিনি জানান, কয়েকদিন আগে থেকে রামপুরা থানায় ৬টি পেট্রোল টিমের সংখ্যা বাড়িয়ে ৮টি করা হয়েছে।
এই চেকপোস্ট ছেড়ে এক কিলোমিটার এগোতেই আরেকটি চেকপোস্ট। এটি রমনা থানার। এখানে কাজ করছে সাব-ইন্সপেক্টর জিয়ার নেতৃত্বে একটি টিম। সাব-ইন্সপেক্টর জিয়া বলেন, র্যাব থাকলেও কাজ করতে হতো, এখনো করতে হয়।
তবে ওই টিমের এক সদস্য নাম না প্রকাশের শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, র্যাবের টহল ও চেকপোস্ট বন্ধ থাকার কারণে আমাদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। কারণ আগে র্যাব থাকলে ঢাকা নগরীর অনেক জায়গা ওদের চেকপোস্ট থাকতো। এখন তা নেই। যে কারণে বাড়তি চেকপোস্ট যেমন বসাতে হচ্ছে এবং সেই সঙ্গে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।
এছাড়া গুলশান, বনানী, রামপুরা, মৎস্যভবন, মিরপুর, ধানমন্ডিসহ রাজধানী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পুলিশের এমন তৎপরতার দৃশ্য চোখে পড়ে।