ধূমপান নিষিদ্ধ করলে এর পক্ষে সবাইকে দাঁড়াতে হবে : ইকবাল সোবহান চৌধুরী

0
152
Print Friendly, PDF & Email

প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেছেন, শুধু কর বৃদ্ধি নয় আইন করে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হলে সবাইকে এর পক্ষে দাঁড়াতে হবে। তামাক কোম্পনিগুলোর ওপর আরো করারোপ হলে তামাকসেবী কমবে এবং তামাককে নিরুৎসাহিতও করা যাবে। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষতি সত্ত্বেও মিডিয়া তামাকের বিজ্ঞাপনের প্রচার প্রসঙ্গে সরকারের সাথে একমত হয়েছে। তারা তামাকের কোনো বিজ্ঞাপন প্রচার করে না। বাংলাদেশে নাটকে অথবা সিনেমায় ধূমপানের দৃশ্য প্রচার নিষিদ্ধের পক্ষে মত দেন।
গতকাল হোটেল ‘সোনারগাঁওয়ে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। একই সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো: গোলাম হোসেন জানিয়েছেন, প্রতি বছর বাংলাদেশ তামাক কোম্পানিগুলো থেকে ১৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পায়। এটা বাংলাদেশে সর্বোচ্চ রাজস্বপ্রাপ্তির খাত। চলতি অর্থবছরে ইতোমধ্যে ১২ হাজার কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। বাকি টাকা সামনের ক’দিনে আসবে বলে আশা করেন তিনি। গোলাম হোসেন বলেন, গত অর্থবছরে তামাক কোম্পানি থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়া গেছে। গোলাম হোসেন বলেন, তারপরও আমি বলব তামাক কোম্পানি মোট দামের ৭৫ শতাংশ কর হওয়া উচিত যদি এ কোম্পানিগুলোর চার স্লাবে ৭৫ শতাংশের বেশি করারোপ হচ্ছে। তিনি বলেন, এ বছর অর্থনীতি রিপোর্টারদের সম্মেলনে ‘গ্রিন ট্যাক্সের’ একটি প্রস্তাব রেখেছিলাম দেশব্যাপী মানুষের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ার জন্য। ইতোমধ্যে এ মন্তব্যে বেশ আলোচনা হয়েছে। গোলাম হোসেন ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, আরো কয়েক বছর ধূমপানই ১ নম্বর রাজস্বের উৎস হিসেবে থেকে যাবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল-উল হক। তিনি পরোক্ষ ধূমপানের শিকার দাবি করে বলেন, আমি এবং আমার ভাই ক্যান্সারে আক্রান্ত। ১৯৮৬ সালে আমাকে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল ক্যান্সারের কারণে। তিনি বলেন, সিগারেটের ক্ষতি থেকে জাতিকে বাঁচাতে হলে একটা কিছু করতেই হবে। ই সিগারেট চালু করা যেতে পারে।
অনুষ্ঠানটি ‘মানকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা বা মানস আয়োজন করে। এতে মানসের সভাপতি অধ্যাপক ডা: অরূপ রতন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন এবং ধূমপানের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরেন পাওয়া পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে।
অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, একটি সিগারেট পান করলে তাতে একজন মানুষের আয়ু কমে গড়ে ১১ মিনিট। বাংলাদেশে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের মধ্যে ধূমপানের হার বাড়ছে। ২৮ শতাংশ নারী ধোঁয়াহীন তামাক যেমন জর্দা, সাদা পাতা ইত্যাদি ব্যবহার করেন। চিকিৎসকের কাছে ৩০ রোগী আসেন মুখের ক্যান্সার নিয়ে যা ধূমপান থেকে হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বয়স্ক মানুষের মধ্যে ৪৩ শতাংশ ধূমপান করে। ডা: চৌধুরী বলেন, ধূমপানের কারণে অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসা দিতে সরকারকে বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হয়। ধূমপান থেকে মানুষকে বিরত রাখতে অধিক হারে তামাক কোম্পানিগুলোর ওপর করারোপ করার দাবি জানান তিনি।

শেয়ার করুন