পাবনার ঈশ্বরদীতে র্যাবের হেফাজতে থাকা অবস্থায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছেন বলে র্যাব দাবি করলেও পরিবারের দাবি, এটি ‘হত্যাকাণ্ড’।
নিহত হামিদুল ইসলাম (৩৫) চরমপন্থি দল সর্বহারা পার্টির নেতা ছিলেন বলে পুলিশ বলছে। তবে পরিবারের দাবি, তিনি আওয়ামী লীগ করতেন; যাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদেরও সায় মিলেছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঈশ্বরদীর পাকশী ইউনিয়নের হঠাৎপাড়া গ্রামে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যান হামিদুল। খবর পেয়ে সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে আনে পুলিশ।
নিহতের পরিবার দাবি করেছে, দুপুরে বাড়ির সামনে নিজের মুদি দোকান থেকে হামিদুলকে র্যাব সদস্যরা ধরে নিয়ে যায়। বিকালে তারা হামিদুলের মৃত্যুর খবর পান।
ঈশ্বরদী থানার ওসি বিমান কুমার দাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হামিদুলকে নিয়ে পাকশীর হঠাৎপাড়া গ্রামে গেলে ধানক্ষেতে লুকিয়ে থাকা তার সঙ্গীরা র্যাব সদস্যদের লক্ষ করে গুলি ছুড়ে, তখন র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়।”
“এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই হামিদুল নিহত এবং দুই র্যাব সদস্যসহ ৫ জন আহত হন,” র্যাবকে উদ্ধৃত করে বলেন তিনি।
ওসি বলেন, আহত র্যাব সদস্যদের প্রথমে পাবনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে র্যাবের কনস্টেবল রানা হামিদ ও সেনা সদস্য মুজিবুর রহমানকে বগুড়া সিএমএইচে পাঠানো হয়।
র্যাব ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে বলেও জানান তিনি।
নিহত হামিদুল পাবনা সদর থানার দাপুনিয়া ইউনিয়নের ক্ষুদাইরপুর রাখালগাছি গ্রামের মৃত দিলবার শেখের ছেলে।
তার ভাই সবেদ আলী খাঁ , বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সাদা পোশাকে তিন ব্যক্তি বাড়ির পাশের মুদি দোকান থেকে হামিদুলকে আটক করে গাড়িতে তোলে।
এ সময় গ্রামবাসী বাধা দিলে তারা নিজেদের র্যাব সদস্য পরিচয় দেন বলে জানান তিনি।
“পরে তাকে ক্যাম্পে না নিয়ে পাশের বাবুর বাগানে নিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে, যা এলাকার শত শত লোক দেখেছে।”
“বিকালে তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। আমরা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে খবর পাই, হামিদুল র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে,” বলেন সবেদ।
হামিদুলকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে আদালতের আশ্রয় নেবেন বলেও জানান সবেদ আলী।
ওসি বিমান দাশ বলেন, হামিদুল সর্বহারা পার্টির সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন।
তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে সবেদ বলেন, তার ভাই নিষি
দ্ধ কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, তিনি আওয়ামী লীগ করতেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে হামিদুলের এলাকা দাপুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হামিদুল পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন।