অসংখ্য মানুষের সামনে দুই ম্যাজিস্ট্রেটকে লাঞ্ছিত করলো আ’লীগ নেতা

0
515
Print Friendly, PDF & Email

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা আব্দুল হক ডিগ্রি কলেজ মাঠে অবৈধভাবে চলে আসা সার্কাস, জুয়া এবং অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শনী বন্ধ করতে গিয়ে আজ রবিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন জেলা কালেকটরেটের দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তাঁদের কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে টেনে নিয়ে গিয়ে অসংখ্য মানুষের সামনে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। এ সময় তার স্ত্রী ওই কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি আওয়ামী লীগ নেত্রী সৈয়দা খুরশীদ জাহান স্মৃতিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরে ওই কলেজ মাঠে ছাত্রদের খেলাধুলা বন্ধ করে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্যের নির্দেশে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই সেখানে সার্কাস প্রদর্শনী শুরু করা হয়। বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সমেশ উদ্দিন বাবু ওই সার্কাসের উদ্যোক্তা। সেখানে চলছিলো নগ্ন নৃত্য এবং জুয়া ও মাদকের আসর। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। আজ রবিবার গাইবান্ধায় জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় অবৈধ সার্কাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সর্বস্তরের প্রতিনিধিরা একমত হন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ আহম্মেদ ও মেজবাহুল হকের নেতৃত্বে ১০ জন পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যের একটি দল সেখানে যান। তারা সার্কাসের অনুমতিপত্র দেখতে চাইলে উদ্যোক্তারা তাদের চ্যালেঞ্জ করে এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যকে বিষয়টি অবহিত করে। খবর পেয়ে সংসদ সদস্য এবং তার স্ত্রী সার্কাসের প্যাণ্ডেল এলাকায় আসেন এবং ম্যাজিস্ট্রেট দু’জনের সাথে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। একপর্যায়ে সংসদ সদস্যের লোকজন ম্যাজিস্ট্রেট দু’জনকে জোর করে কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন তাঁদের প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যরা অবরুদ্ধ অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েন। পরে সংসদ সদস্য ও তাঁর লোকজনের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে ম্যজিস্ট্রেটরা গাইবান্ধায় ফিরে আসেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. এহছানে এলাহীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের বাসভবনের কার্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জরুরি বৈঠক হয়। জেলা প্রশাসক আরো জানান, রাতেই ওই ঘটনায় থানায় একটি জিডি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন।

শেয়ার করুন