চাকরি স্থায়ী করে দেয়ার লোভ দেখিয়ে এক কর্মচারিকে ‘মেয়ে’ সংগ্রহ করে দিতে বলেন এক শিক্ষক। ওই কর্মচারিও চাকরি ‘পাকা’ করার আশায় ভাড়া করে নিয়ে আসে এক যৌনকর্মীকে।
ঘটনা ফাঁস হলে ওই শিক্ষকের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।
এটা কোনো গল্প নয়, গল্পের মতো এ ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার বিকেলে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি)। ওই শিক্ষকের নাম আখতার হোসেন চৌধুরী রানা। তিনি বাকৃবির কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পরিচালক।
তবে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. আবু হাদী নুর জানান, বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কয়েকজন শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হোসেন কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পরিচালক ও কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আক্তার হোসেন চৌধুরীর কক্ষে এক যৌনকর্মীকে ঢুকিয়ে তালা দিয়ে দেয়।
এভাবে অবরুদ্ধ করে রাখার খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতির নেতারা পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে।
এদিকে ড. আখতার হোসেন চৌধুরীর কক্ষে যৌনকর্মী পাওয়ার খবরে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন চৌধুরী রানা বলেন, ‘আমি বুধবার বিকাল ৫ টা ১০মিনিট পর্যন্ত প্রফেসর মুহাম্মদ হোসেন কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে ছিলাম। কর্মচারী আশরাফুল একটি মেয়ে নিয়ে আমার কাছে আসে চাকরির জন্য। তাদের দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে আমি অফিসে প্রবেশ করি।’
কর্মচারি আশরাফুল বলেন, ‘রানা স্যারের কাছে চাকরির জন্য যাই। তিনি একটি ‘মেয়ে’র ব্যবস্থা করতে বলেন। সোয়া ৫ টার দিকে আমি পতিতা নূপুরকে নিয়ে স্যারের কক্ষে যাই। আমি নূপুরকে চিনি না।’
যৌনকর্মী নূপুর বলেন, ‘ফোনের মাধ্যমে আড়াই হাজার টাকায় ‘ঠিক’ করে আমাকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। আমার সঙ্গে একজন লোক ছিলেন। বাইরে বের হওয়ার সময় দেখি তালা লাগানো।’
অন্যদিকে তার কক্ষে তালা লাগানো এবং যৌনকর্মীর সন্ধান কে কোথায় পেয়েছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. এমএ সাত্তার বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে কোনো তথ্য দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তদন্ত প্রতিবেদন এলে বলা হবে সব।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল করিম বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে কোনো মামলা হয়নি। তবে ওই ঘটনায় আটক আশ্রাফুল ও নুপুরকে ২৯০ ধারায় আদালতে চালান দেয়া হলে তারা জামিন নিয়েছে ।’