নেইমারের লক্ষ্য ‘মেসির হার’

0
141
Print Friendly, PDF & Email

পেলে তাকে একবাক্যে বিশ্বসেরা বলে রায় দিয়ে দিলেও তার চোখে সময়ের সেরা ফুটবলার হলেন লিওনেল মেসি। ক্লাব ফুটবলে দুজনের লড়াইটাও হয় একই দলের হয়ে। কিন্তু বিশ্বকাপ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে আর ক্লাব ফুটবলের সম্পর্ক নিয়ে খুব ভাবছেন না নেইমার দ্যস স্যান্তোস। চোখেমুখে তার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন। আর এই বিশ্বকাপ জয়ের জন্য যে মেসিকে হারানোর প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করছেন তিনি।

২২ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার এবারই প্রথম খেলতে নামবেন বিশ্বকাপের মঞ্চে। আর প্রথমবার এসেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনালের স্বপ্নের কথা জানালেন তিনি। আর সেই লড়াইয়েই মেসিকে হারানোর ঘোষণা দিলেন তিনি। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ফাইনালে যদি আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হই, তাহলে আমি আমার যোগ্যতার সম্পূর্ণটা দিয়ে খেলার চেষ্টা করবো। ওকে আমার হারাতেই হবে। আমি জানি ঠিক একই কাজটা মেসিও করতে চেষ্টা করবে। ম্যাচ শেষে আমরা আলিঙ্গন করবো। এই দুটি ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। এর বাদে কি হবে জানি না।’

ন্যু ক্যাম্পেই নাকি মেসির সাথে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে নেইমারের, ‘আসলে মেসির সাথে আমি এ প্রসঙ্গে ন্যু ক্যাম্পের ড্রেসিং রুমে কথা বলেছি। ও বলেছিল, দুজনেই যদি ফাইনালে উঠি তাহলে জিতবে আর্জেন্টিনা। আমি বলেছিলাম ব্রাজিল জিতবে। ও অসাধারণ একজন খেলোয়াড়। ওকে এতো কাছের থেকে দেখতে পেরে নিজেকে সত্যি অনেক ভাগ্যবান বলে মনে হয়।’

গত বছর কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের প্রস্তুত বলেই ঘোষণা করে ব্রাজিল। বড় কোন অঘটন না ঘটলে এবারের শেষ ষোলতেই ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ হতে পারে সেই স্পেন। নেইমার অবশ্য কোন দলকেই আলাদা করে দেখতে চাইছেন না, ‘এখন সময়টা এমন যে, প্রতিপক্ষের কোনকিছুই আর অজানা থাকে না। আমরা তাদের ব্যাপারে জানি, ওরাও আমাদের সম্পর্কে জানে। যখন আপনি সেরাদের সেরা হতে চান, তখন আপনি আর কোন নির্দিষ্ট দল বাছাই করে নিতে পারেন না। আপনাকে সবাইকে হারানোর ক্ষমতা থাকতে হবে। প্রতিটা দলকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে মোকাবেলা করতে হবে। তাহলেই সেরা দল হয়ে ওঠা যাবে।’

স্পেনের প্রসঙ্গে নেইমার আরও বলেন, ‘ওরা বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। দুটি ইউরো জয়ের অভিজ্ঞতাও আছে দলটির। শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার সবধরনের ক্ষমতাই ওদের আছে। কিন্তু আমরাও বিশ্বকাপের জন্যই খেলবো। ওদের বিপক্ষে প্রথমেই আমাদের শুরুটা ভাল হওয়া লাগবে। যেমনটা আমরা করেছিলাম কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনালে। প্রথম বাঁশি বাজার সাথে সাথেই আমাদের নিজেদের গুছিয়ে ফেলতে হবে।’

‘এ’ গ্রুপে এবার ব্রাজিলের প্রতিপক্ষরা হল ক্রোয়েশিয়া, মেক্সিকো ও ক্যামেরুন। আগামী ১২ জুন ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ মিশন। আর সেই যাত্রাকে সামনে রেখে নেইমারের উপরে চাপ কমানোর কথা বললেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী পেলে। ১৯৫৮ সালে পেলে যখন প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নামেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৭। তাই ২২ বছর বয়সী নেইমারের ব্যাপারে কথা বলার জন্য তিনিই সবচেয়ে যোগ্য লোক। ১৯৫৮ সালের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমি যখন সুইডেনে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাই তখন আমি দলের মূল খেলোয়াড় ছিলাম না। তখন ব্রাজিলে গিলমার, নিল্টন স্যান্তোস, জাগালো, দিদির মত গ্রেট ফুটবলাররা ছিলেন। আমার ভূমিকাটা ছিল দলে তাদের সাহায্য করা। কিন্তু নেইমারের ব্যাপারটা ভিন্ন। তাকে অনেক বেশি দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। এটাই তার প্রথম বিশ্বকাপ। আর একইসাথে বিশ্বকাপ জয়ের জন্যই সবাই তাকিয়ে থাকবে ওর দিকেই।’

রক্ষণভাগ নিয়ে কোন সমস্যা না দেখলেও আক্রমণভাগে বড় ধরনের সমস্যা দেখছেন ৭৩ বছর বয়সী পেলে, ‘আক্রমণভাগে আমার চোখে অনেক সমস্যা ধরা পড়েছে। ওখানে শুধু নেইমারই আছে। ওর সাথে আরও প্রতিভাবান কয়েকজন দরকার ছিল আমাদের। এই বয়সেই ওর জন্য চাপটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে।’

শেয়ার করুন