প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টোকিওতে চারদিনের সরকারি সফরে আজ রাতে ঢাকা ত্যাগ করছেন। নতুন দফায় ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি তার প্রথম বিদেশ সফর।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী গঙ্গা বাঁধসহ প্রস্তাবিত বেশ কিছু বৃহৎ প্রকল্পে জাপানী সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী আজ এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে মানব সম্পদ ও বৃহৎ অবকাঠামো উন্নয়নে জাপানের আগ্রহ বেড়েছে। তাই ব্যাপক অংশীদারিত্ব পর্যায়ে জাপানের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছি।
তিনি বলেন, সফরকালে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ, যমুনা নদীর নিচ দিয়ে বহুমুখী টানেল, নতুন একটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু সেতু সংলগ্ন পৃথক একটি রেলওয়ে সেতু, রাজধানী ঢাকার আশেপাশের নদীসমূহ পুনরুদ্ধারসহ সেতু তৈরির মাধ্যমে মাওয়া-যশোর মহাসড়ক উন্নয়নের কাজে জাপানকে সহায়তার কথা বলবেন।
আলী বলেন, চারদিনের সফরকালে ঢাকা জাপানিজ ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসট্যান্স (ওড্এি) চুক্তির বিষয়ে ঘোষণা আশা করছে।
সফরকালে শেখ হাসিনা দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের সাথে বৈঠক ছাড়াও জাপানী বিনিয়োগাকারী এবং জাপান সরকারের নেতৃবৃন্দের সাথেও সাক্ষাত করবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, ঢাকা জাপানের কাছে একসাথে সবগুলো প্রকল্পে সহযোগিতা প্রত্যাশা করে না। কিন্তু এ সফরের মাধ্যমে সবগুলো প্রকল্পে দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
প্রকল্পসমূহে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রত্যাশার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বাসস কে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর টোকিও সফলকালে ঢাকা গঙ্গা নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণের সহযোগিতা চাইতে পারে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় অথবা পানি উন্নয়ন বোর্ড সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসব প্রকল্পের ব্যাপারে নতুন করে কোনো প্রস্তাব দেয়নি কিন্তু বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ এর আগে এ বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে বিভিন্ন অবকাঠামোগত অবস্থানের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
২০০১ সালে আওয়ামী লীগের শাসনামলে কুষ্টিয়ার ঠাকুরবাড়ি এলাকার কাছে গঙ্গার ওপর বাঁধ নির্মাণের জরিপ চালানো হয়েছিল।
কর্মকর্তারা বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগ ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিরো সাদোশিমা বলেন, তার দেশ বর্তমান সরকারের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে। তার এই বক্তব্যের তিনদিন পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী হাসান মাহমুদ আলী এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
মাহমুদ আলী বলেন, ‘না আপনার সরকারের সাথে (শিরো সাদোশিমা) কোনো ধরনের চুক্তি করতে আমাদের সমস্যা হবে না। কারণ আমরা মনে করি চলতি বছরের জানুয়ারিতে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তা সাংবিধানিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্ট অব বাংলাদেশ (ডিকেব) আয়োজিত জাতীয় প্রেস কাবের অডিটোরিয়ামে সাদোশিমা এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও জাপানী কোম্পানির মালামাল রেকর্ডসংখ্যক বিক্রি হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও আমাদের কোম্পানিগুলো রেকর্ড মালামাল বিক্রি হয়েছে।’