বগুড়ায় চেয়ারম্যানের বাড়িতে যুবলীগকর্মী খুনে ব্যবহৃত পিস্তল ও গুলি উদ্ধার

0
232
Print Friendly, PDF & Email

বগুড়ার শিবগঞ্জে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে যুবলীগকর্মী সন্ত্রাসী শিপলু খুনের পর ওই বাড়ি থেকে পুলিশ দু’টি বিদেশী পিস্তল, ম্যাগাজিন ও পাঁচ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। চেয়ারম্যান রিজু ও তার সহযোগীকে অস্ত্র ও হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল শুক্রবার কোর্টে পাঠায় পুলিশ। শিপলু অস্ত্রসহ র‌্যাবের হাতে এক সময় গ্রেফতার হয়েছিল।
পুলিশ জানায়, বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও শিবগঞ্জ এলাকার জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর শ্যালক ফিরোজ আহমেদ রিজুর ঘাগুর দুয়ার গ্রামের বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার ফরহাদ হোসেন ওরফে শিপলু নিহত হয়। এরপর রাতে চেয়ারম্যান রিজু এবং তার সহযোগী শহরের মালতিনগরের আবু সায়েম ওরফে শান্তকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চেযারম্যানের গ্রামের বাড়ি থেকে দু’টি বিদেশী পিস্তল, দু’টি ম্যাগাজিন ও পাঁচ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে রায়নগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর শ্যালক ফিরোজ আহমেদ রিজু পুলিশকে জানিয়েছেন, তার কাছে থাকা দু’টি অবৈধ পিস্তল মেরামতের জন্য গত বৃহস্পতিবার শান্তর মাধ্যমে বালু ব্যবসায়ী যুবলীগকর্মী ফরহাদ হোসেন শিপলুকে চেয়ারম্যানের গ্রামের বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের ঘাগুর দুয়ারে ডেকে নেয়া হয়। সেখানে পিস্তল মেরামতের সময় অসাবধানতাবশত একটি গুলি শিপলুর তলপেটে লাগলে সে আহত হয়। গুরুতর অবস্থায় চেয়ারম্যানের নিজের মাইক্রোবাসে করে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েই মাইক্রোবাসসহ সবাই পালিয়ে যায়। কিছুণ পর শিপলু মারা গেলে পুলিশ ওই মাইক্রোবাস এবং মাইক্রোবাসে থাকা ব্যক্তিদের সন্ধানে মাঠে নামে। একপর্যায়ে ঘটনার সাথে চেয়ারম্যান রিজুর সম্পৃক্ততার আভাস পেয়ে সদর থানা পুলিশ রিজুকে তার শহরের শিববাটির বাসা থেকে আটক করে। রাতে তার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দু’টি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও পাঁচ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। শিপলু নিহতের ঘটনায় তার ভাই ফেরদৌস রহমান বাদি হয়ে চেয়ারম্যান রিজু, তার সহপাঠী শান্ত এবং রায়নগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। অন্য দিকে সদর থানার এসআই আসলাম বাদি হয়ে চেয়ারম্যান রিজুসহ উল্লিখিত তিনজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা করেছেন।
জানা গেছে, স্থানীয় মহাস্থান হাটের ইজারা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। অনেকের ধারণা মহাস্থান হাটের ইজারাকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড হতে পারে। বিষয়টি অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন বলে এলাকাবাসী জানান।
রায়নগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মজিবর রহমান মাস্টারের ছেলে ফিরোজ আহমেদ রিজু এক সময় ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। গত ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে তার ভগ্নিপতি, জাতীয় পার্টির বগুড়া জেলা সভাপতি শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ বিনা ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রিজু বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। নিজের বাড়িতে যুবলীগকর্মীকে হত্যা এবং বাড়ি থেকে দু’টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পর চেয়ারম্যান রিজুর বিরুদ্ধে ইউনিয়নবাসীর মনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
এ দিকে চেয়ারম্যানের বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবলীগকর্মী ও বালু ব্যবসায়ী শিপলু নিহতের ঘটনা নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে পপাতিত্বের খেলার অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সময় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এর চেয়ে ছোট ঘটনা সংবাদ সম্মেলন করে মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচারের অনুরোধ করা হলেও এ েেত্র ব্যত্যয় ঘটেছে।

শেয়ার করুন