বিস্ময়কর ধূলিমেঘের সন্ধান

0
212
Print Friendly, PDF & Email

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) স্পিৎজার দূরবীক্ষণ যন্ত্র (স্পেস টেলিস্কোপ) ব্যবহার করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা খুঁজে েপয়েছেন অত্যন্ত ঘন একটি ধূলিমেঘ৷ পৃথিবী থেকে প্রায় ১৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই ধূলিমেঘ এযাবৎকালের গভীরতম ছায়ার সমষ্টি বলে জানিয়েছে নাসা৷
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিস্ময়কর ধূলিমেঘটি সুবিশাল, এটির ব্যাসই প্রায় ৫০ আলোকবর্ষ৷ আর ওই স্থানের ভর সাত হাজার সূর্যের মোট ভরের সমান৷ ঘন েমঘের ছায়া সেখানে ৈতরি করেছে ‘কালোর মধ্যেও সবচেয়ে বেশি কালো’ অঞ্চল৷ ওই ধূলিমেঘ আমাদের ছায়াপথের সবচেয়ে শক্তিশালী ও কম বয়সী তারকাগুচ্ছগুলোর একটি হিসাবে বিকশিত হতে পারে৷ সবচেয়ে ঘন গুচ্ছগুলো সেখানকার বৃহত্তম ও সবচেয়ে শক্তিশালী তারকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে৷ ও-টাইপ স্টার নামের এসব তারকার গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো ধাঁধার মধ্যে রয়েছেন৷ এসব প্রকাণ্ড নক্ষত্র আশপাশের পরিবেশের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এবং জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপাদান তৈরিতেও ভূমিকা রাখে৷
সুইজারল্যান্ডের জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মাইকেল বাটলার ওই ধূলিমেঘ অনুসন্ধানবিষয়ক একটি গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন৷ এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স সাময়িকীতে৷ বাটলার বলেন, ধূলিমেঘের গঠনের মানচিত্র এবং ঘনত্ব দেখে প্রকাণ্ড তারকা ও নক্ষত্রমণ্ডলের গঠনপ্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়৷
সম্ভবত আমাদের সূর্যসহ মহাবিশ্বের অধিকাংশ নক্ষত্র ওই ধূলিমেঘের আশপাশের পরিবেশ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন৷ কম ভরের তারকাগুচ্ছ খুবই পরিচিত এবং এসব নিয়ে গবেষণাও হয়েছে বিস্তর৷ কিন্তু বেশি ভরের নক্ষত্রগুলো নিয়ে এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা তুলনামূলক অস্পষ্ট৷ তাই এ ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও নতুন গবেষণা করাটাও তুলনামূলক কঠিন৷ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান শিক্ষক জোনাথান ট্যান বলেন, স্পিৎজার একটি বিরল ও প্রকাণ্ড নক্ষত্রমণ্ডলের গঠনপ্রক্রিয়ার ছবি তুলেছে৷ এটি সম্ভবত ওই তারকাগুচ্ছের সবচেয়ে প্রথম পর্যায়ের অবস্থার দৃশ্য৷
ও-টাইপ নক্ষত্র থেকে নীলাভ সাদা আলো পাওয়া যায়৷ এ তারকার ভর সূর্যের ১৬ গুণ এবং এটির পৃষ্ঠের তাপমাত্রা অন্তত ৩০ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ আশপাশের গ্রহ-উপগ্রহের ওপর এ ধরনের নক্ষত্রের প্রভাব অনেক৷ তবে এ রকম নক্ষত্রের আয়ু তুলনামূলক কম এবং এগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়৷ ও-টাইপ নক্ষত্রে কীভাবে আমাদের সূর্যের চেয়ে ১০ থেকে ১০০ গুণ ভর সঞ্চিত থাকে এবং তা ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে পড়ে না, সে ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন৷ ট্যান বলেন, এসব প্রকাণ্ড নক্ষত্র কীভাবে গঠিত হয়, সে ব্যাপারে তাঁরা ব্যাখ্যা বা তত্ত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন৷
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

শেয়ার করুন