হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কম খরচে ইন্টারনেট

0
117
Print Friendly, PDF & Email

দেশে এখনো ইন্টারনেট ব্যবহার অনেক ব্যয়বহুল। বিশেষ করে বেসরকারি মোবাইল কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের নিকট থেকে ইন্টারনেট সেবা দেয়ার নামে অনেক বেশি অর্থ নিচ্ছে। তাই দেশের সব নাগরিকের কম খরচে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দিতে প্রায় হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাস হয়েছে একনেক সভায়।
প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সকালে শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্পটিসহ মোট ছয় হাজার ৩৮৬ কোটি সাত লাখ টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদিত প্রকল্পগুলো সম্পর্কে সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) সাংবাদিকদের জানান। এ সময় পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
অনুমোদিত প্রকল্প চারটি হলো পল্লী বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেমের ক্ষমতা বর্ধন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপন, বিভাগীয় ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ এবং উত্তরা লেক উন্নয়ন প্রকল্প। মোট প্রকল্প বরাদ্দের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন এক হাজার ৮৪৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, প্রকল্প সাহায্য চার হাজার ৩১৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল ২২৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। চারটি প্রকল্পই নতুন প্রকল্প। একটি প্রকল্প সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে।
জানা যায়, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্পে ৯৫৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটির মোট ব্যয়ের মধ্যে জিওবি ৩৪৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৬১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি হতে শুরু করে আগামী ২০১৭ সালের জুনে শেষ করার কথা। মন্ত্রী জানান, সবার জন্য কম খরচে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা দিতে ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক স্থাপন একান্তভাবেই দরকার। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ কাজটি করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকার দু’টি স্থানে কোর নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া সাতটি বিভাগীয় শহরসহ জেলা ও উপজেলা শহরে মোট ৬৭০টি বেইজ ট্রান্সসিভার স্টেশন (বিটিএস) নির্মাণসহ ৩০০ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট সেবার পরিধি বৃদ্ধি এবং উচ্চ গতি ও উচ্চ মানসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা পেতে প্রকল্পটি সত্যিকারভাবেই সহায়ক হবে।
এ ছাড়া একনেক সভায় পল্লী বিদুৎ বিতরণ সিস্টেমের ক্ষমতা বর্ধন নামক প্রকল্পটি পাস হয়। এতে ব্যয় হবে পাঁচ হাজার ১৯৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। প্রকল্পটি জিওবি, সংস্থার নিজস্ব এবং বৈদেশিক অর্থায়নে বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্প ব্যয়ের মোট বরাদ্দকৃত টাকার মধ্যে জিওবি এক হাজার ২৯৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব ২০০ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে তিন হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল জুলাই, ২০১৪ হতে জুন, ২০২০ পর্যন্ত ধরা হয়েছে।
‘বিভাগীয় ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ’ শীর্ষক ১৯৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার প্রকল্প পাস হয়। সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে অক্টোবর, ২০১৩ হতে জুন, ২০১৭ পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় সংস্কৃতির উন্নয়ন সমৃদ্ধি ও প্রসারসহ কলাকুশলীদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রদর্শন এবং প্রশিক্ষণের জন্য অবকাঠামোগত সুবিধা সৃষ্টি হবে। প্রকল্পের আওতায় তিনটি বিভাগীয় শিল্পকলা একাডেমি এবং পাঁচটি জেলা শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া, সভায় ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকার উত্তরাবাসীর জন্য ‘উত্তরা লেক উন্নয়ন’ শীর্ষক অপর একটি প্রকল্প পাস হয়

শেয়ার করুন