ধূমপানের কারণে আপনার ফুসফুস ও অন্ত্রে ক্যানসার হতে পারে৷ ধূমপান বাড়িয়ে দেয় হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি৷ মুখের ক্যানসারের গুরুত্বপূর্ণ কারণও এই ধূমপান৷ সবই হয়তো আপনি জানেন, কিন্তু ছাড়তে পারছেন না৷ অথবা এক-দুবার ছেড়ে দিয়ে আবার ধরেছেন৷ ধূমপায়ীদের জন্য তাই বিজ্ঞানীদের কিছু পরামর্শ৷
.কেন ছাড়তে চান?
ধূমপান আপনার কী কী ক্ষতি করতে পারে সেসব নিয়ে বিশদ পড়াশোনা করুন৷ আজকাল ইন্টারনেটে সব তথ্যই বিরাজমান, সেগুলো ঘাঁটুন৷ ঘাঁটতে ঘাঁটতেই দেখবেন ধূমপানের প্রতি একধরনের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হচ্ছে৷ নিকোটিন একধরনের নেশা৷ আর এই নেশা ছেড়ে দিলে উইথড্রয়াল লক্ষণ হতেই পারে৷ আগে থেকেই জেনে নিন সেগুলো কী? যেমন খিটখিটে লাগা, বিরক্তি, অস্থিরতা ইত্যাদি৷ সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই লক্ষণগুলো সবচেয়ে প্রকট হয়ে দেখা দেবে৷ তবে মনে রাখবেন, আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য বজায় রাখলে দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে আপনি অনেকটাই ভালো বোধ করবেন৷
ঢাকঢোল পেটানো ভালো
গবেষকেরা বলছেন, রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে উৎসবমুখরভাবে ধূমপান ছাড়া ভালো৷ একটা ভালো দিন বেছে নিন, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সবাইকে জানিয়ে দিন যে ওই দিন আপনি সিগারেট ছাড়তে যাচ্ছেন৷ যেদিন ছাড়বেন সেদিন ঘর থেকে অ্যাশট্রে, সিগারেটের প্যাকেট, দিয়াশলাই বা লাইটার সব ফেলে দিন৷ সিগারেটের গন্ধযুক্ত জামাকাপড় ধুয়ে ফেলুন৷ ঘরে বা গাড়িতে এয়ারফ্রেশনার ছিটিয়ে দিন৷ সিগারেটের শেষ স্মৃতিচিহ্নটিও যেন না থাকে৷
যদি প্রচণ্ড ইচ্ছে হয়
একে বলে সিগারেটের জন্য প্রচণ্ড তৃষ্ণা বা ক্রেভিং৷ প্রথম প্রথম এমনটা হবে৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, কিছু কিছু জিনিস এই ক্রেভিং বাড়িয়ে দেয়৷ যেমন: মাংসজাতীয় খাবার, চা, কফি, কোমল পানীয় বা অ্যালকোহল কিংবা ধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গ৷ আপনার উচিত হবে এগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা৷ বেশির ভাগ মানুষ বলেন যে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমাতে সিগারেট তাদের সাহায্য করে৷ নিজেকে বোঝান যে মানসিক চাপ কমানোর আরও স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি আছে৷ যেমন: প্রতিদিন একটু হাঁটা বা ব্যায়াম, শারীরিক কসরত হয় এমন কাজ—যেমন বাগান করা, ভালো সংগীত, ভালো বইয়ের সঙ্গ, যোগ ব্যায়াম বা মেডিটেশন, বন্ধু বা সন্তানের সঙ্গে আড্ডা, হাসিঠাট্টা, খেলাধুলা৷ ধূমপানের ইচ্ছে হলে মুখে চুইংগাম, লজেন্স দিতে পারেন৷
.নতুন জীবন শুরু করুন
১ মাসে: আপনার ঘ্রাণ ও স্বাদ গ্রহণের অনুভূতির উন্নতি হবে৷
৩ মাসে: ফুসফুসের কার্যক্রমে উন্নতি শুরু হবে৷
৮ ঘণ্টায়: অতিরিক্ত কার্বন মনোক্সাইড রক্ত থেকে বেরিয়ে যায়৷
১ মাসে: ত্বকের বাইরের অংশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে৷
৫ দিনে: অধিকাংশ নিকোটিন শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে৷
১২ : মাসে:হৃদরোগের ঝুঁকি অর্ধেক কমে যায়৷
এই যুদ্ধে জিততে আপনার আত্মবিশ্বাস আর সৎ সাহসই যথেষ্ট৷ আর প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সফলতার সঙ্গেই তা করছে, আপনি পারবেন না কেন?
সূত্র: ওয়েবমেড, এনএইচএস ইউকে, পেশেন্ট.ইউকে