বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারতের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে হটিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় আসায় আওয়ামী লীগ সরকার নার্ভাস হয়ে পড়েছে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাম্প্রতিক কথাবার্তায় সেটিই প্রমাণিত হয়েছে।
আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস কাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি একথা বলছিলেন।
ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৩৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘ভারতের কঠোর পানি আগ্রাসনের কবলে বাংলাদেশের পরিত্রাণের উপায় ও আশু করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে আগ্রাসন প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল প্রশ্ন করেন, কোথায় দেখলেন যে ভারতের নির্বাচনে বিএনপি উল্লসিত হয়েছে? বিএনপি চায় ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছা-আকাঙ্খার বিষয়টি অনুধাবন করতে পারবে। কিন্তু আপনারা নার্ভাস হয়ে এত কথা বলছেন কেন? আসলেই কি ভয় পেয়েছেন?
তিনি বলেন, ভারত স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে নির্বাচন করেছে। সেখানে জনগণের ভোটে সরকারের পরিবর্তন হয়েছে। কংগ্রেসের পরিবর্তে বিজেপিকে বেছে নিয়েছে তারা। ভারত প্রতিবেশী বন্ধু দেশ। সেই হিসেবে ভারত, বাংলাদেশের বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করবে বলে বিএনপি বিশ্বাস করে।
ভারতের নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের উৎফুল্ল হওয়ার কারণ আছে বলে মনে করেন না বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ভারতের প্রতি বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের মেরুদণ্ডহীন, নতজানু এবং দাসত্বমূলক মনোভাবের কারণেই বাংলাদেশের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধানে কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসেনি।
তিনি বলেন, এ কারণে শুধু পানি আগ্রাসন নয়, সাংস্কৃতিক, আকাশ ও রাজনৈতিক আগ্রাসনসহ বহুমুখী আগ্রাসনে বাংলাদেশ আক্রান্ত হয়ে গেছে। এজন্য ভারতকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। কারণ তারা তাদের স্বার্থে কাজ করছে। কিন্তু আমাদের দেশের একটা শ্রেণী ভারতের এসব আগ্রাসনকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। সহযোগিতা করছে। স্বাধীনতার ৪২ বছর পরেও জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে না পারায় হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
মির্জা আলমগীর আরো বলেন, কোনো দয়া-দাক্ষিণ্য নয়, অভিন্ন নদীর পানিপ্রাপ্তি আমাদের ন্যায্য অধিকার। কিন্তু এ বিষয়ে ভারতের কাছে জোর দাবি উত্থাপন করার ক্ষমতা বর্তমান সরকারের নেই। কারণ তারা জনগণের সরকার নয়। তাই সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ অতীতের মতো গণতন্ত্র হত্যা করতে কাজ করছে। তাই জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি দমন করার জন্য বিরোধীদল থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মানুষকেও খুন-গুম-অপহরণ করছে। আর এ কাজে এলিট ফোর্স র্যাবকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান এ এইচ এম কামরুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে গোল টেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মো. ইব্রাহিম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তুজা, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল মোবিন প্রমুখ।