ঝালকাঠির রাজাপুর, বরিশালের আগৈলঝাড়া, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে ২৪টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। দুই শতাধিক কাঁচা ও আধাকাঁচা ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে ২১ জন আহত হয়েছেন।
রাজাপুর (ঝালকাঠি) সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠির রাজাপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার ছয় ইউনিয়নে মসজিদ, মাদরাসা, স্কুলসহ শতাধিক বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘরের নিচে চাপা পড়ে শিশু ও বৃদ্ধসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে এতে উপজেলার ইন্দ্রপাশা গ্রামের হাওলাদার বাড়ির জামে মসজিদ, আমানতগঞ্জ আদাখোলা দাখিল মাদরাসা, কানুদাশকাঠি মাদরাসা, ইসাহাকাবাদ মাদরাসা, বাদুড়তলা স্কুল, কাঠাখালি মাদরাসা, শামসুল হক ফরাজির হাফেজি মাদরাসা ও ইউসুব আলী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ইন্দ্রপাশা গ্রামের জলিল হাওলাদার, বেল্লাল হাওলাদার, পালটের মিজান, জীবনদাশকাঠি গ্রামের ইউসুফ হাওলাদারের ও আলগী গ্রামের সৈয়দ আকনের বসতঘরসহ শতাধিক বসতঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। ঝড়ে ঘরচাপা পড়ে ইন্দ্রপাশা গ্রামের বৃদ্ধ আছিয়া বেগম, আলগী গ্রামের সৈয়দের ছেলে শিশু শাকিল ও মেয়ে সুরভিসহ পাঁচজন আহত হয়েছে।
আগৈলঝাড়া (বরিশাল) সংবাদদাতা জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় অসংখ্য গাছপালা ও ঘরবাড়ির ক্ষতিসহ একজন আহত হয়েছেন। বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছপালার ডালপালা ও বাঁশ পড়ে তার ছিঁড়ে উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন সড়কের দুই পাশের গাছ ভেঙে পড়ে কিছু সময়ের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উপজেলার রতœপুর ইউনিয়নের ছয়গ্রামের পাশে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে গেছে। অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছপালার ডাল ও বাঁশ পড়ে তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ওয়াপদা রাস্তার পাশে জোবারপাড় নামক স্থানে ঝড়ের সময় ঘরের ওপর গাছ পড়ে প্রমিলা পাণ্ডে নামে এক মহিলা গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, আড়াইহাজারে কালবৈশাখী ঝড়ে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আড়াইহাজার উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে বিশনন্দী ও খাগকান্দা ইউনিয়নে সব চেয়ে বেশি তি হয়। ঘরবাড়ি হারিয়ে মানিকপুর গ্রামের কয়েকটি পরিবার খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গুলশান আরা বিশনন্দী ইউনিয়নের মানিকপুর, চৈতনকান্দা, টেটিয়া ও বিশনন্দী ফেরিঘাটের তিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, পুরো উপজেলায় তি হয়েছে। সব চেয়ে বেশি তি হয়েছে বিশনন্দী ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নে ৪০টির মতো ঘরবাড়ি উড়ে গেছে। ঝড়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। এর মধ্যে মাওলানা রফিকুল ইসলাম, হাসনারা, সোহেল ও হাবিবুল্লাহকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঝড়ের কবলে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সহস্রাধিক গাছ ভেঙে গেছে। রাস্তায় গাছ পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ ছিল প্রায় ছয় ঘণ্টা। ১৫টির মতো বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে।
কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে অর্ধশত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার তারাকান্দর, ডুমরিয়া, পিঞ্জুরী, শুয়াগ্রাম, ধারাবাইল গ্রামের ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ে পিঞ্জুরী ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়সহ প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়।