এগুলো কোল্ডব্লাডেড হত্যাকাণ্ড

0
141
Print Friendly, PDF & Email

এভাবে দিনের পর দিন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখিনি। এটাকে বলা যায় কোল্ডব্লাডেড হত্যাকাণ্ড। একেবারে ঠাণ্ডা মাথায় একজনকে ধরে নিয়ে গিয়ে গুলি করে মেরে ফেলা, তারপর দিনের পর দিন একই কিচ্ছা বলা। প্রথম প্রথম ক্রসফায়ারের কথা অনেকে বিশ্বাস করত। এখন মনে হয় বাংলাদেশের ৯৫ ভাগ লোক ক্রসফায়ারের কথা আর বিশ্বাস করে না। এভাবে দিনের পর দিন চললে শুধু ওই বাহিনী নয়, সারা দেশের জন্য, আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। গত মঙ্গলবার এটিএন নিউজ-এর টকশো ‘নিউজ আওয়ার এক্সট্রা’ সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক এ কথা বলেন। প্রভাষ আমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মো. ইবরাহিম ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মহম্মদ আলী শিকদার।

ড. শাহদীন মালিক বলেন, পুলিশও নির্যাতন করে। পুলিশের হাতেও দু’চারজন মারা যায়নি এমন নয়। সাবেক আইজি এস এম শাহজাহান কিছুদিন আগে বলেছিলেন, তিনি যখন আইজি ছিলেন তখন পুরো সময়ে একজন সিভিলিয়ান মারা গিয়েছিলেন পুলিশের গুলিতে। দিনাজপুরের ইয়াসমিন। ৯৫ কি ৯৬ সালের ঘটনা। এরপর আড়াই কি তিন বছরে আর কেউ মারা যায়নি। ওই ঘটনায় সারা দেশে অনেক তোলপাড় হয়েছে। এর জন্য তিনজন পুলিশের শাস্তি হয়েছিল। কিন্তু এভাবে দিনের পর দিন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কখনো হয়নি।

তিনি বলেন, এ ধরনের বিচারবহির্ভূত বাহিনী বানিয়ে দুনিয়ার বহু দেশ অপরাধ দমনের চেষ্টা করেছে। অনেক দেশেই যখন মারাত্মক অপরাধগুলো সাধারণ পুলিশ বাহিনী দমন করতে ব্যর্থ হয় তখন বিশেষ বাহিনী করে আইনবহির্ভূতভাবে অপরাধ দমনের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এতে ফল ভালো হয়নি। প্রত্যেকটি দেশেই আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়েছে। প্রথমে কিছু খারাপ লোক মারা পড়লেও পরে সাধারণ লোক মারা গেছে। তেমনি র‌্যাবও আগে অপরাধীদের দমনে কাজ করলেও এখন ভাড়ায় খাটছে বলেই সাধারণ মানুষের ধারণা।

র‌্যাব বিলুপ্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন বিলুপ্ত করলেই সমাধান হবে না। একটা লোক যখন ১০টা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করে তখন তাকে বাহিনীতে রেখে সমাধান সম্ভব নয়। সে তো বাহিনীর আর ১০ জনকে খারাপ করে ফেলবে। আগে র‌্যাবের ক্রসফায়ার ছিল। পরে পুলিশেরও ক্রসফায়ার শুরু হয়ে গেছে। তাদের দেখাদেখি অন্য বাহিনীও একই ধারায় চলতে শুরু করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, প্রতিটি বিষয়ে রাজনৈতিক প্রভাব আছে। অন্যায় আবদার আসতে পারে। কিন্তু আমি ভালো লোক হলে সেটা কেন মানব? প্রয়োজনে চলে যাব। যখন কেউ অন্যায় আবদারের প্রতিবাদ করার ক্ষমতা রাখে না তখন বুঝতে হবে ওই চাকরি করার অধিকার তার নেই।

শেয়ার করুন