একটু আগেই আর্জেন্টিনার ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দলের নাম ঘোষণা করেছেন দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের মুখপাত্র আর্নেস্তো বিয়ালো। পরে দল ও খেলোয়াড়সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা। পরশু বুয়েনস এইরেসে l এএফপিফুটবল ইতিহাসে অমরত্বের জন্য বিশ্বকাপ জেতার দরকার আছে? ফুটবলারটির নাম যদি লিওনেল মেসি হয় তাহলে উত্তরটা হচ্ছে, না, নেই। বার্সেলোনার হয়ে আর্জেন্টাইন জাদুকর এরই মধ্যে এত কিছু করেছেন যে কখনো বিশ্বকাপ না জিতলেও তাঁকে সর্বকালের সেরাদের মধ্যে রাখতে হবে। এটা স্বয়ং ম্যারাডোনার কথা। একই কথা বলেছিলেন হোসে মরিনহোও। আচ্ছা, মেসি নিজে কী বলেন?
লিওনেল মেসিকিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে সরাসরি না হলেও ঘুরিয়ে ঠিক এই কথাটাই বলেছিলেন মেসি, ‘এমন অনেক কিংবদন্তি ফুটবলারই তো আছেন যাঁরা বিশ্বকাপ জেতেননি।’ সমালোচকদের জবাব দেওয়ার জন্য ভালো যুক্তি। কিন্তু হৃদয়ের গিহনে মেসিও জানেন, বিশ্বকাপ না জিততে পারলে সারা জীবন একটা আফসোস বয়ে বেড়াতে হবে তাঁকে। যে আফসোস নিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ফেরেঙ্ক পুসকাস। যে আক্ষেপ আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন আলফ্রেডো ডি স্টেফানো, ইয়োহান ক্রুইফরা। আর্জেন্টাইন বলে মেসির মধ্যে ম্যারাডোনাকে দেখেন অনেকে। তবে বিশ্বকাপের মূল্যটা জানেন বলেই মেসির উপলব্ধি, এখনো ম্যারাডোনার সঙ্গে তাঁর তুলনার সময় আসেনি। দ্বিধাহীনভাবেই স্বীকার করলেন, ‘ম্যারাডোনার সঙ্গে তুলনাটা আমার কাছে বড় প্রাপ্তি, কিন্তু এখনো এই প্রশংসা গ্রহণ করার মতো হইনি আমি। আর্জেন্টিনার হয়ে তিনি এত কিছু করেছেন! আর আমি মনে করি বিশ্বকাপ না জিততে পারলে কোনো খেলোয়াড়কেই সত্যিকারের কিংবদন্তি বলা যায় না।’
১৯৮৬ বিশ্বকাপে ২৬ বছর বয়সী ম্যারাডোনা প্রায় একাই বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন আর্জেন্টিনাকে। আগে দুটি বিশ্বকাপ খেললেও সোনালি ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখার সৌভাগ্য মেসির হয়নি। বার্সেলোনার ২৭ ছুঁই ছুঁই ফরোয়ার্ড এবার অনেক পরিণত, ক্লাব ফুটবলের সম্ভাব্য সব শিরোপা জিতে সর্বকালের সেরা হওয়ার চূড়ান্ত শর্ত পূরণের অপেক্ষায়। পারবেন কি তিনি? ‘আশা করি পারব এবং সেটা এই গ্রীষ্মেই। তার আগ পর্যন্ত আমাকে সেরা না বলাই ভালো’—বলেছেন আত্মবিশ্বাসী মেসি।
বার্সেলোনার হয়ে সব ধরনের টুর্নামেন্টে ৪২৪ ম্যাচ খেলে ৩৫৪ গোল, ২১টি ট্রফি, মোহময় জাদুতে আচ্ছন্ন করে রাখা অসংখ্য মুহূর্ত এসব কি তবে কিছুই বিবেচনায় আসবে না? মেসি জবাবটা তুলে রাখতে চাইছেন ভবিষ্যতের জন্য, ‘যখন মানুষ আপনাকে নিয়ে সুন্দর কথা বলে, আপনার খেলার প্রশংসা করে সেগুলো শুনতে ভালো লাগে। কিন্তু আমি সব সময় বলি, ক্যারিয়ার শেষ করে যখন আমি পেছন ফিরে তাকাব তখন কেবল বোঝা যাবে আমার অর্জন কতটুকু। তার আগ পর্যন্ত আমার কাজ হচ্ছে বার্সেলোনা ও আর্জেন্টিনার হয়ে আরও ভালো খেলে যাওয়া।’ ওয়েবসাইট।