ফুটপাতে নিশ্চিত মনে হাঁটবেন, আজকাল সে উপায় নেই। হাঁটার রাস্তায় একের পর এক মোটরসাইকেল উঠে যায়। আপনাকে থামিয়ে দিয়ে উচ্চ শব্দে হর্ন বাজিয়ে ফুটপাথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে সারি সারি মোটরসাইকেল। রাস্তায় এটি এখন সাধারণ দৃশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনে হয়, ফুটপাত বুঝি মোটরসাইকেল চালানোর জন্যই। এই মোটরসাইকেলের চালকেরা রাস্তায় আইন-কানুনের তোয়াক্কাই করে না।
ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালানো একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। ২০১২ সালে হাইকোর্ট বিভাগ ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ করেছেন। ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালালে চালকদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগ।
হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ না মানা আদালত অবমাননার শামিল। মোটরযান অধ্যাদেশ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অ্যাক্ট অনুযায়ী কোনো রাস্তায় বা জনগণের চলার জায়গায় কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না। যদি কেউ কোনোভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে, তাহলে দায়ী ব্যক্তিকে জেল এবং জরিমানা দুটির একটি অথবা উভয় সাজা ভোগ করতে হবে। ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি অমান্য করা যাবে না এবং অমান্য করে ফুটপাত দিয়ে গাড়ি চালালে ট্রাফিক পুলিশের ক্ষমতা রয়েছে দায়ী চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার। বেপরোয়া যান চালানো যাবে না। নির্দিষ্ট গতিসীমার বাইরে যান চালানো যাবে না। এ ছাড়া মোটরসাইকেলে অতিরিক্ত আরোহী বহন করা যাবে না। কেউ হেলমেট ছাড়া কোনোভাবেই রাস্তায় মোটরসাইকেল নিয়ে বের হতে পারবে না। এ ছাড়া একপাশে চলাচলের রাস্তায় বিপরীত পাশ থেকে কোনো গাড়ি চালানো যাবে না। এসব অপরাধের জন্য সর্বনিম্ন ২০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ জেলের বিধান রয়েছে। এ ছাড়া এসব অপরাধের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্সও সাময়িক বাতিলের ক্ষমতা কর্তৃপক্ষের রয়েছে।
মনে রাখতে হবে, ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালানো দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেউ ফুটপাত দিয়ে গাড়ি চালালে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা আদালত পুলিশকে দিয়েছেন। তাই ফুটপাত দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার আগে একটু ভাবুন, সামনে কোনো মামলা-মোকদ্দমা কিংবা জেল-জরিমানা অপেক্ষা করছে না তো?
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট