খুন,গুম ও অপহরণের শিকার হওয়া বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুব শিগগিরই সম্মেলন করবে বিএনপি।
এ সম্মেলনে দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক মিশনকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি ডাকা হবে সুশীল সমাজ ও দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও।
সম্মেলন প্রস্তুতির জন্য কয়েকজন বিশ্বস্ত নেতাকে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন খালেদা জিয়া, এমনটাই দাবি করলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের ঘনিষ্ঠ এক নেতা।
সূত্র জানায়,চলতি বছরের মার্চ মাসে গুলশান অফিসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে ডেকে পাঠান খালেদা জিয়া। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেত্রীর বিশ্বস্ত বলে পরিচিত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সালাউদ্দিন আহমেদ, মো. শাজাহান,বরকত উল্লাহ বুলু ও মিজানুর রহমান মিনু।
বৈঠকে সম্মেলনের বিষয়ে তাদের মতামত নেন খালেদা জিয়া। উপস্থিত নেতারা এ ধরনের একটি সম্মেলন করার পক্ষে মত দেন।
বৈঠকে খালেদা জিয়া সরকার বিরোধী আন্দোলন চলাকালে নিহত, আহত নেতাকর্মীদের পাশাপাশি গুম ও অপহরণের শিকার হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারগুলোর তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন। এছাড়া মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীদের তালিকা তৈরিরও নির্দেশ দেন তিনি।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও অপহরণ,খুন ও গুমের শিকার হওয়া নেতাকর্মীদের স্বজনদের নিয়ে ঢাকায় একটি সম্মেলনের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন বলে জানিয়েছে তার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এক বিএনপি নেতা।
জানা গেছে, ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনের সময় হতাহত বিএনপি নেতাকর্মীদের একটি তালিকা তৈরি করেছে দলটি।
সারাদেশে খুন গুমের শিকার তিনশ’রও বেশি বিএনপি নেতা কর্মীর তালিকা ইতোমধ্যেই দলটির প্রধান খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে দেয়া হয়েছে বলেও জানান ওই নেতা।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি বলেন, তাদের হাতে খুন ও গুম হওয়া তিনশ’রও বেশি নেতা-কর্মীর তালিকা এসেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দলটির এক যুগ্ম মহাসচিব বাংলানিউজকে বলেন, এ ধরনের একটি সম্মেলন করার চিন্তা আছে। তবে এ সম্মেলন কবে নাগাদ হবে তার দিন তারিখ ঠিক হয়নি বলে জানান তিনি।
সর্বশেষ রোববার গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলামের বাড়িতে যান খালেদা।
সেখানে তিনি খুন-গুম ও অপহরণের সঙ্গে সরকারকে দায়ী করে বলেন সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের খুন গুম ও অপহরণ করাচ্ছে।
সর্বশেষ মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের শিকার ব্যক্তিদের বাড়িতে যান খালেদা। সেখানেও তিনি দেশব্যাপী খুন ও গুমের জন্য সরকারকে দায়ী করে অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করেন।
জানা গেছে, ঢাকায় পরিকল্পিত ওই সম্মেলন থেকেই পরবর্তী আন্দোলনের রূপরেখা প্রকাশ করবেন খালেদা জিয়া।