বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ফাইনালের তৃতীয় দিনে ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতক হাঁকিয়েছেন জাতীয় দলের ওপেনার ইমরুল কায়েস। ২৭ বছর বয়সী এই ওপেনার ব্যাটসম্যান তার ক্রিকেট জীবনে স্বপ্নের দ্বিশতকটি তার বাবা-মাকে উৎসর্গ করেছেন। রোবরার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিএলে প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে ২০৪ রান সংগ্রহ করেছেন ইমরুল। তাতে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ দলের ওপেনার। ম্যাচ শেষে ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতক নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় দলের এই ব্যটসম্যান। তার কথাগুলো বাংলামেইল২৪ডটকমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: দারুণ একটি ইনিংস খেললেন। কেমন লাগছে?
ইমরুল: অবশ্যই খুব ভালো লাগছে। অনেক দিন ধরেই একটি দ্বিশতক করার চেষ্টা করছিলাম। কারণ দুইশোর্ধ রানের একটি ইনিংস খেলতে না পারা একজন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের জন্য খুব পজিটিভ কিছু নয়। সবমিলিয়ে এটা আমার জন্য খুব দরকার ছিল।
প্রশ্ন: অন্য ব্যাটসম্যানরা দ্বিশতক করেছেন। তাদের দেখেই কি নিজের প্রত্যাশা বেড়েছে?।
ইমরুল: হ্যাঁ, সেটাই। অন্য ব্যাটসম্যানরা ভালো কিছু করলে নিজের মধ্যে একটি জেদ কাজ করে। অন্য একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নিজের কাছে মনে হয়, অন্যেরা পারছে, আমি কেন পারবো না। আমাকেও পারতে হবে। আসলে দ্বিশতক করতে পারা প্রত্যেক ব্যাটসম্যানের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ এবং অর্জন।’
প্রশ্ন: গত কয়েক দিনে কারা দ্বিশতক হাঁকিয়েছেন নাম বলতে পারবেন?
ইমরুল: হ্যাঁ, তা তো পারবই। শামসুর দ্বিশতক করেছে।এছাড়া ফরহাদ রেজাও দ্বিশতকের স্বাদ পেয়েছেন।’
প্রশ্ন: আপনি আগেও বড় ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু তা দ্বিশতকে রুপান্তরিত হয়নি। কেন হয়নি। সেটা কি সেঞ্চুরির পরপরই আত্মতৃপ্তির কারণে, নাকি বড় কোন আকাঙ্খাই ছিল না?
ইমরুল: ভাগ্যের কারণেই তা সম্ভব হয়নি। ইচ্ছা অবশ্যই ছিল। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় একাডেমির হয়ে ১৫০ রান করেছিলাম। তখন থেকেই চেষ্টা ছিলো আগের সর্বোচ্চ রানটা পেরিয়ে যাওয়ার। শেষ পর্যন্ত সেটা পেরেছি।’
প্রশ্ন: ঠিক কখন মনে হলো যে ডাবল সেঞ্চুরি হতে পারে?
ইমরুল: ব্যাটিংয়ে নামার সময় ভালো খেলার পরিকল্পনা ছিল। আগের ইনিংসে বাজেভাবে আউট হয়েছি। এবার তাই ওরকম না করার চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি মাটিতে বল রেখে খেলতে। উঁচু করে না মারার চেষ্টা করেছি সব সময়। এই চেষ্টাটার কারণেই হয়তো আজ সফল হলাম।’
প্রশ্ন: কতো রান হওয়ার পর মনে হয়েছে দ্বিশতক হতে পারে?
ইমরুল: আসলে ১৪০ রানের পরই প্রথম মনে হয়েছে দ্বিশতক হতে পারে। তখন থেকেই শুরুর মতো মাথা ঠাণ্ডা রেখেছি। এরপর এমনিতেই দ্বিশতক হয়ে গেছে।’
প্রশ্ন: উইকেট কেমন?।
ইমরুল: বর্তমান উইকেটটা দারুণ। স্পোর্টিং উইকেট। বোলার ও ব্যাটসম্যান সবার জন্যই আদর্শ উইকেট। আমি বলবো এটি খুবই ভালো উইকেট।’
প্রশ্ন: তাইজুলের বোলিং নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। তাকে নিয়ে আপনার মূল্যায়নটা কী?
ইমরুল: তাইজুল আসলেই অনেক ভালো বোলিং করছে। সর্বশেষ এক বছরে সে ধারাবাহিক ভাবে ভালো পারফর্ম করছে। আমাদের দেশে অনেক বাঁহাতি বিশ্বমানের স্পিনার আছে। তাইজুলও তাদের একজন। ’
প্রশ্ন: আগে বলেছিলেন ভালো ব্যাটিংয়ের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তো সেই পরিবেশটা আসলে কী?
ইমরুল: পরিবেশটা হলো- এখন দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে অহরহ শতক দেখছি। এটি বড় একটি প্রেরণা। যে সেঞ্চুরি করে তাকে দেখে সবারই মনে হয় আমিও যেন ওর মতো বড় একটি বড় ইনিংস খেলতে পারি।’
প্রশ্ন: সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবেন। এই ইনিংসটা কী বিশেষ প্রেরণা দিবে?
ইমরুল: সব সময়ই চেষ্টা করি বড় ইনিংস খেলতে। এই ম্যাচের ভালো খেলাটা ওয়েস্ট ইন্ডিজে কাজে লাগাতে চাই। চেষ্টা করবো বড় ইনিংস খেলতে।’
প্রশ্ন: ম্যাচের অবস্থা এখন কি?
ইমরুল: ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে। আগামীকাল (সোমবার) প্রথম দুই সেশনে ভালো ব্যাটিং করতে চাই। ওদেরকে এমন একটি টার্গেট দিতে চাই, যাতে সহজে চেজ করা না যায়।
প্রশ্ন: বিসিএলের এই ডাবল সেঞ্চুরিটি কাকে উৎসর্গ করবেন?
ইমরুল: এটা অবশ্যই আমার বাবা-মাকে উৎসর্গ করবে আমি।’