দেশের ৪৬৫টি উপজেলায় পরিকল্পিত আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন,‘নগরের উপর চাপ কমাতে গ্রামেও আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলা হবে। ইতিমধ্যে গোপালগঞ্জ ও রাউজানে প্রকল্প শুরু হয়েছে। গ্রামে নাগরিক সুযোগ সুবিধা পেলে লোকজন আর শহরমুখী হবে না।’
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মে দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন(সিইউজে) আয়োজিত সেমিনার ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সেমিনারে ‘মে দিবস: প্রেক্ষিত চট্টগ্রামের সংবাদ পত্র’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিইউজে সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন,‘জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অনেক জায়গা বেহাত হয়ে গেছে। সরকারের প্রভাবশালীরা এসব দখলে নিয়েছে। অবশিষ্ট জায়গায় নান্দনিক অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করে ২০ বছরের সহজ কিস্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হবে। সেখানে সাংবাদিকদের জন্যও কোটা রাখা হবে। যাতে সাংবাদিকদের আবাসন সমস্যার সমাধান হয়।’
মন্ত্রী বলেন,‘প্রতি বর্গফুট অ্যাপার্টমেন্টের দাম ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। যা মধ্যবিত্তের আয়ত্তের বাইরে। এমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে ঢাকার বুকে ১০ হাজার টাকায় প্রতি বর্গফুট অ্যাপার্টমেন্ট পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে সে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’
তিনি বলেন,‘১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থাকাকালে এক লাখ অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৪ বছরে এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। আগামী চার বছরে এসব অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণে মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।’
গৃহায়ণ মন্ত্রী বলেন,‘চট্টগ্রামেও নান্দনিক সৌন্দর্যমন্ডিত হাউজিং প্রকল্প গড়ে তোলা হবে। জিইসি মোড়ে বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট গড়ে তোলা হবে। যাতে খুলশীতে অ্যাপার্টমেন্টের দাম কমে আসে।’
CUJ_May
মন্ত্রী বলেন,‘ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রত্যেকের আছে। আপনাদের ন্যায্য দাবি দাওয়ার প্রতি আমি একমত পোষণ করছি।’
মুক্তিযুদ্ধে সাংবাদিকদের ভুমিকার কথা স্মরণ করে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন,‘আপনারা না থাকলে আমরা বস্তুনিষ্ট সংবাদ পেতাম না। আপনারা আটঘণ্টার বাইরেও কাজ করেন। আপনাদের কাজের কোনো নির্ধারিত সময় নেই। অষ্টম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে আমার সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।’
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন,‘সাংবাদিকরা দ্বিধাবিভক্ত হওয়ার কারণে মালিকরা সুযোগ নিচ্ছে। সরকারও সুযোগ নিচ্ছে। ফলে চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা নিষ্পেষিত হচ্ছে।’
সাংবাদিক নেতারা বলেন,‘ঢাকায় সাংবাদিকরা যে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে চট্টগ্রামে তা পাচ্ছে না। চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ ফান্ড গঠন করেছেন। কিন্তু কল্যাণ ফান্ডের টাকা ঢাকা ও বরিশালের সাংবাদিকরা পেয়েছে ৫০হাজার করে আর চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা পেয়েছে ২০হাজার। এমনকি বরিশালের এক সাংবাদিক ১লাখ টাকাও পেয়েছে।’
বক্তারা বলেন,‘অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে মালিকদের পাশাপাশি কয়েকজন নেতৃস্থানীয় সাংবাদিকের ষড়যন্ত্র রয়েছে। সিইউজে এমন একজনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করছি সিইউজে সামনেও এ ধরণের কঠোর পদক্ষেপ অব্যহত রাখবে।’
আলোচনা সভায় বক্তারা সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা ও রুটি-রুজি আদায়ের সংগ্রামে সিইউজের লড়াকু ভুমিকা অব্যহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এজাজ ইউসুফীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌসের সঞ্চালনায় আলোচনা সভা ও সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি আবু তাহের মুহাম্মদ, ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, যুগ্ম মহাসচিব আসিফ সিরাজ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, সিইউজের সাবেক সভাপতি শহীদ উল আলম, বণিক বার্তার ব্যুরো প্রধান আলী হায়দার, ডিইউজের কোষাধ্যক্ষ শাহানা শিউলীসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।