সহিংসতাকবলিত দক্ষিণ সুদানে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিগ্রহ থামানোর লক্ষ্যে দেশটির সরকার ও বিদ্রোহী গ্রুপের নেতার মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। দেশটিতে মানবিক সহায়তার অনুমোদন দেয়াসহ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়েও দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় পূর্ব আফ্রিকার আঞ্চলিক জোট ইন্টারগভর্নমেন্টাল অথরিটি অন ডেভেলপমেন্ট বা আই-জি-এ-ডি এবং এর বর্তমান প্রধান ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী হেইলেমারিয়াম ডেসালেনের মধ্যস্থতায় শুক্রবার রাতে প্রেসিডেন্ট সালভা কির ও বিদ্রোহী নেতা রিয়েক মাশার যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। দেশটিতে জাতিগত সহিংসতা শুরুর পর এটাই তাদের প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। আদ্দিস আবাবা থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, চুক্তি অনুযায়ী আগামী চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে উভয়পক্ষকেই লড়াই বন্ধ করতে হবে, তবেই একটি স্থায়ী য্দ্ধুবিরতিতে যাওয়া সম্ভব হবে। তবে সংবাদদাতারা বলছেন, এই শান্তি চুক্তি কতটা বাস্তবায়ন হয় তাই এখন দেখার বিষয়। চুক্তিতে মানবিক সাহায্যের অনুমোদন দেয়াসহ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়েও দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। তবে অন্তর্বতী প্রশাসন কারা গঠন করবে এই বিষয়টি পরিস্কার জানা যায়নি। আদ্দিস আবাবার সমঝোতা আলোচনা সহিংসতা নিরসনে কাজ করবে বলে আশা করছে সরকারী পক্ষ, তবে বিদ্রোহীরা বলছে সরকারী বাহিনীর হামলা এখনও অব্যাহত আছে। বিদ্রোহী বাহিনীর মুখপাত্র লুই রুয়াই বলছেন, গতকাল সন্ধ্যায় এবং আজ সকালে রুবকোন নামক একটি জায়গায় সালভা কিরের বাহিনী আমাদের বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছে। এছাড়াও মাথিয়াং ও দুলেইব হিলস এলাকায় তারা হামলা চালিয়েছে। দু’পক্ষের শান্তি আলোচনায় ইতিবাচক ফলাফলের জন্য এই ধরনের হামলা কোনভাবেই সহায়ক হবে না। সরকার ও বিরোধী বাহিনী এমন সময়ে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করলো যার একদিন আগে জাতিসঙ্ঘ দক্ষিণ সুদানের জাতিগত সহিংসতার জন্য উভয় পক্ষকে দায়ী করে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদনে জাতিসঙ্ঘ বলেছে, হত্যাকাণ্ড, যৌন দাসত্ব, গণধর্ষণ সহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের একটি দেশে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ সুদান। প্রেসিডেন্ট সালভা কির ও তার সাবেক সহকারি রিয়েক মাশারের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে দেশটিতে সংঘর্ষ সহিংসতা শুরু হয়। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ, বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে লাখ লাখ মানুষ।