বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান চতুর্থ। ৯১টি দেশের এক হাজার ৬০০টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূষিত ২৫টি শহরের তালিকায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকা। ঘরের বাইরে (আউটডোর) বায়ুদূষণের ওপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সর্বশেষ জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপের ফল অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি দূষিত বায়ুর ২৫টি শহরের তালিকায় নারায়ণগঞ্জের অবস্থান ১৭তম। গাজীপুর ২১তম ও ঢাকা ২৩তম অবস্থানে। তালিকায় সবচেয়ে বেশি দূষিত শহর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ভারতের দিল্লিকে।
সবচেয়ে বেশি দূষণের দেশের তালিকার শীর্ষে আছে পাকিস্তান। এরপর কাতার ও আফগানিস্তান। তালিকায় ১০ নম্বরের মধ্যে থাকা অন্য দেশগুলো: ইরান, মিসর, মঙ্গোলিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত ও বাহরাইন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, দূষণ নির্ণয়ের জন্য বাতাসে ভাসমান অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণা (যাকে পিএম২.৫ বলা হচ্ছে) নিয়মিত পরিমাপ করা হয় এবং বছর শেষে তা গড় করা হয়। পিএম২.৫ অ্যামোনিয়া, কার্বন, নাইট্রেট ও সালফেটের ক্ষুদ্র কণা বা মাইক্রোনের একধরনের সমন্বয়। পরিবেশে এর মাত্রা বেশি থাকলে শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এর ক্ষতিকর প্রভাবে ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগ হতে পারে। বাতাসে পিএম২.৫-এর মাত্রা ২৫ মাইক্রোগ্রাম হলে তা নিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তর ২০১৩ সালে যে তথ্য সংগ্রহ করেছিল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সেই তথ্য ব্যবহার করেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেট শহরের বায়ুর মান নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার প্রতিবেদনে বলেছে, জরিপের আওতাধীন শহরগুলোর ৮৮ শতাংশ মানুষ বাতাসে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি থাকা ভাসমান সূক্ষ্ম বস্তুকণার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ২০টি শহরে বাতাসে ক্ষতিকর পিএম২.৫ সবচেয়ে বেশি। এ শহরগুলোর মধ্যে অর্ধেকের বেশি রয়েছে ভারতে। ভারতের দিল্লিতে পিএম২.৫-এর মাত্রা পাওয়া গেছে ১৫৩ মাইক্রোগ্রাম।
বেইজিংয়ের চেয়ে দিল্লিকে বেশি দূষিত শহর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবচেয়ে দূষিত ২০টি শহরের তালিকায় চীনের কোনো শহর নেই। একই সঙ্গে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও সুইডেনের শহরগুলোতে দূষণের মাত্রা কম।