আধুনিক তরুণ সমাজের মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক সমস্যা হচ্ছে মাদকাসক্তি। মাদকের ভয়াল থাবায় সারা বিশ্বে কতো শত সম্ভাবনাময় তরুণ যে ঝরে যাচ্ছে তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু আসক্ত হওয়ার শুরুতেই যদি শনাক্ত করা যায় তাহলে অনেক তরুণকেই এই বিপজ্জনক পথ থেকে ফেরানো সম্ভব। অনেকে মাদকাসক্তির লক্ষণগুলো ঠিকঠাক বুঝতে পারেন না বলে নেশাগ্রস্তদের সঙ্গে সঠিক আচরণ করতে ব্যর্থ হন এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা করানোর উদ্যোগ নেন না। এখানে মোটামুটি ১২টি লক্ষণ বর্ণনা করা হলো যা আপনাকে একটা ধারণা দিতে সহায়তা করবে।
১. চেহারায় হঠাৎ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যেমন: আকস্মিকভাবে ওজন কমে যাওয়া বা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া, চোখের মনি বড় হয়ে যাওয়া এবং নিশ্বাস ও পোশাক থেকে বিশ্রি গন্ধ বের হওয়া।
২. অরুচি: খাওয়া ও ঘুমানোতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।
৩. সব সময় নোংরা থাকে। স্বাস্থ্য সচেতনতার বালাই থাকে না। কাপড় ধোয় না, গোসল করে না, দাঁত মাজার কথা তো খেয়ালই থাকে না।
৪. স্মৃতি হারিয়ে ফেলা। গত রাতে কী করেছিল বা কী খেয়েছিল বা তার চোখের সামনে কী ঘটেছিল সকালে তার কিছুই স্মরণে থাকে না। এমনকি আহত হলেও বেমালুম ভুলে যায়।
৫. সামাজিক কাজে আগ্রহ থাকে না। স্কুলে যাওয়া, নানা শখ পূরণ, শরীরচর্চা এবং আগে এরকম আরো কিছু বেশ উপভোগ করতো এমন কাজে একদম অনীহা দেখা দেয়।
৬. টাকার চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়। হুট করে টাকা চেয়ে বসে কিন্তু কারণ ব্যাখ্যা করতে চায় না। এছাড়া ধার দেনা করতে করতে কাছের মানুষদের ত্যক্ত-বিরক্ত করে ফেলে। দেনাদাররা বাড়িতে এসে হম্বিতম্বি করে গেলেও অভিভাবকদের কাছে কখনোই ওই ধার-দেনার ব্যাখ্যা দেবে না।
৭. সবকিছুতেই গোপনীয়তা রক্ষা করার প্রবণতা দেখা দেয়। আগে যেখানে প্রায়ই সময় কাটাতে যেতে পছন্দ করতো সেসব জায়গা ও মানুষগুলো এড়িয়ে চলা শুরু করে।
৮. হঠাৎ করেই সামাজিক বলয় পাল্টে ফেলে। যেমন: বহু পুরনো বন্ধু ও সম্পর্কগুলো এড়িয়ে নতুন নতুন বন্ধু জোটাতে শুরু করে। নতুন জায়গায় ঘুরতে যায়, নতুনভাবে সময় কাটায়।
৯. ব্যক্তিত্বে আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। চলাফেরা ও মনোভাবে পরিবর্তন, অসহিঞ্চুতা এবং সামান্যতেই অত্যন্ত রেগে যাওয়া- এসব আচরণ বাড়াবাড়ি রকম চোখে পড়ে কিন্তু কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় না।
১০. কখনো অত্যন্ত সক্রিয়তা চোখে পড়ে আবার কখনো ক্লান্তিতে একদম নুয়ে পড়ে। যেটা অস্বাভাবিকই মনে হবে।
১১. নতুন নতুন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেবে। মাথাব্যাথা, হৃদরোগ, শরীরে কাঁপুনি এবং নাক দিয়ে রক্ত পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
১২. অস্বাভাবিক বা বাতিকগ্রস্তের মতো আচরণ শুরু করে। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে, কাছের মানুষদেরও অবিশ্বাস করতে থাকে।