গণপূর্তের আবাসিকে গ্যাস নেই, ২শ’ হিটারে রান্না

0
114
Print Friendly, PDF & Email

ভেতরে যাবেন না। ওরা খারাপ লোক, ওরা বিদ্যুৎ চোর। গ্যাস নেই বলে দুইশ’র বেশি পরিবার হিটার চালায়।’

শিল্পকলা একাডেমির দক্ষিণ গেটের বিপরীতে চল্লিশোর্ধ চা দোকানি শফিকুল ইসলাম (ছদ্দ নাম) কেরোসিন চুলা জ্বালাতে জ্বালাতে এভাবেই সাবধান করেন।

একাডেমির বিপরীতে রাস্তার দক্ষিণ ওয়ালের ওপারে গণপূর্তের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সরকারি আবাসন ব্যবস্থা। সেখানে ২ শতাধিক পরিবার বাসায় হিটার চালায় দিনভর। গ্যাস নেই। সে কারণেই তারা বিদ্যুৎ নির্ভর হয়ে রান্নার কাজ চালায় বলে দাবি করেন।

এটি যাচাইয়ের জন্য প্রথমেই ভেতরে না গিয়ে সেগুন বাগিচার বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেল বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। বিদ্যুতের লোকজন, প্রশাসন ও এলাকাবাসী সবাই জানেন। তবে এ নিয়ে বিকার নেই কারো।

সুপ্রিম কোর্টের মেইন গেটের পাশে স্থাপত্য ভবনের মূল গেটের উত্তরে এই সরকারি আবাসনের প্রধান ফটক। সেখানে গিয়ে চায়ের দোকান, ফ্লেক্সি লোডের দোকানিকে বাসাভাড়া নেওয়ার কথা বলে জানা গেলো, গ্যাস নেই। সবাই বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। হিটার চালায় দিনভর। গাদাগাদি করে লোকজন থাকে। এখানে ভাড়া পাওয়া যাবে না। ব্যাচেলর ও ফ্যামেলি মিলিয়েও থাকেন গণপূর্তের কর্মচারীরা।

গণপূর্তের ওই সরকারি আবাসিক এলাকার এক ব্যক্তিকে ভেতর থেকে আসতে দেখা গেল। তার সঙ্গে খাতির জমিয়ে কথা বলার চেষ্টার এক পর্যায়ে তিনি বললেন, আমাদেরই জায়গা হয়না, ভাড়া দেবে কে। গ্যাস নেই কোনো জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ব্যক্তি বলেন, দরকার হয়না। বিদ্যুত তো রয়েছেই। হিটার চালিয়ে সব কাজ করা যায়।

কোনো সমস্যা হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমস্যা হবে কেনো, বিদ্যুতের লোকেরা তো টাকা নেয়। তাছাড়া তারা সমস্যা করলে লাকড়ির ব্যবস্থা করে চালিয়ে নিতে হবে। তবে তা করতে হবে না। বিদ্যুতের লোকজনই ব্যবস্থা করে দেবে।

রান্নার কাজে লাকড়ি ব্যবহার করা হয় কিনা তা জানার চেষ্টায় ভেতরে গিয়ে দেখা গেল সত্যিই গাদাগাদি অবস্থা। বেশিক্ষণ থাকলে সেখানে থাকলে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।

তবে লাকড়ি দেখার চেষ্টা করে কোথাও খোঁজ মেলেনি। দুপুর বেলাতেও ধোঁয়া বা লাকড়ির আগুনের ব্যবস্থা দেখা যায়নি। ভেতরে হিটার চলছে জানা গেলেও এ বিষয় নিয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি নন।

বৈদ্যুতিক হিটার চালানো ঠিক কিনা ফিরে আসার পথে এক ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি জানান শুধু এখানে নয়, গণপূর্তের অনেক আবাসিক এলাকেই এমনটি চলে। তবে কোথায় চলে তা না বলেই ওই ব্যক্তি তাৎক্ষণিক বিদায় নেন।

শেয়ার করুন