দেশে আসা বিশালসংখ্যক কন্টেইনার জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হতে পারে। বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১৫ লাখ পণ্যবাহী কন্টেইনার আসে। অন্তত শতকরা ১০ ভাগ অর্থাত্ দেড় লাখ কন্টেইনার রেলপথে ঢাকার আইসিডি’র মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যায়। এসকল কন্টেইনার কোন প্রকার নিরাপত্তা তল্লাশী কিংবা স্ক্যানিং ছাড়াই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রেল পথে ঢাকা আইসিডিতে যায়। ঢাকায় শুধু কায়িক পরীক্ষা করা হয়। স্ক্যানিং-এর ব্যবস্থা নেই। ওই সকল কন্টেইনার করে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি কিংবা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের সামগ্রী আনা হচ্ছে কিনা তা দেখা হয় না। চট্টগ্রাম কাস্টমস কিংবা বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে ঢাকাগামী কন্টেইনারসমূহে কী ধরনের পণ্য যাচ্ছে তা খতিয়ে দেখার বা স্ক্যানারের মাধ্যমে পরখ করার কোন ব্যবস্থা নেই।
দীর্ঘদিন ধরে ঢাকাগামী পণ্যবাহী কন্টেইনারসমূহ বন্দর থেকে সরাসরি বের হলেও তা দেখার ব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা এবং বন্দর ও কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ঢাকাগামী কন্টেইনারসমূহ জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশী বা স্ক্যানিং করা জরুরি বলে অভিমত প্রকাশ করেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, বিশ্বের সকল আধুনিক বন্দরসমূহ থেকে যে কোন কন্টেইনার বন্দরের বাইরে যেতে অবশ্যই স্ক্যানিং করে দেখা হয়। আধুনিক বিশ্বে বাংলাদেশের প্রধান চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যবাহী কন্টেইনারের স্ক্যানিং না হওয়া খুবই দুর্ভাগ্যজনক বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ মনে করেন। শুধু পণ্যবাহী কন্টেইনারই নয়, প্রতিদিন বন্দরের ভিতর যে শত শত যানবাহন প্রবেশ করছে তারও কোন স্ক্যানিং পদ্ধতিতে তল্লাশী করা হয় না। চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (নিরাপত্তা) লেঃ কর্নেল মোয়াজ্জেম হোসেনও তার উদ্বেগের কথা জানান। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে একটি মোবাইল স্ক্যানার কেনা হয়েছে। কিন্তু তা দিয়ে কোনভাবেই পণ্যবাহী কন্টেইনার কিংবা যানবাহন স্ক্যানিং করা সম্ভব নয়।
চট্টগ্রাম বন্দরে ১০টি সিকিউরিটি গেট রয়েছে। এর প্রতিটি গেটে না হলেও ৫/৬টি গেটে স্ক্যানার থাকলে সকল পণ্যবাহী কন্টেইনারসহ যানবাহন সহজে তল্লাশী করা সম্ভব। চট্টগ্রাম বন্দরে আসা পণ্যবাহী কন্টেইনারসমূহের যে সকল কন্টেইনার চট্টগ্রামে শুল্কায়ন করা হয়; শুধুমাত্র ওই সকল কন্টেইনার স্ক্যানারের মাধ্যমে তল্লাশী করার ব্যবস্থা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি কন্টেইনারের স্ক্যানিং-এর জন্য একটি ফি নেয়া হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমসের তত্ত্বাবধানে এ সকল স্ক্যানার পরিচালিত হয়। গত কয়েক বছর পূর্বে মার্কিন সরকারের অর্থায়নে ওই সকল স্ক্যানার স্থাপন করা হয়। একইসাথে ওই সকল স্ক্যানারের পরিচালনার জন্য বেশ কয়েকজনকে প্রশিক্ষণও দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশ কিংবা অন্যান্য দেশ থেকে যাতে কোন রাসায়নিক বা ক্ষতিকারক পদার্থ বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে স্ক্যানারসমূহ স্থাপন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসছে অথচ কোন প্রকার স্ক্যানিং ছাড়াই বিশালসংখ্যক আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ঢাকা হয়ে দেশের বিভিন্ন অংশে চলে যাচ্ছে। ঢাকা আইসিডিতে কন্টেইনারবাহী পণ্যের শুধুমাত্র কায়িক পরীক্ষা করা হয়, কোন প্রকার স্ক্যানিং-এর ব্যবস্থা নেই। সংশ্লিষ্টদের মতে, বিদেশ থেকে দেশে আসা সকল পণ্যবাহী কন্টেইনার স্ক্যানিং জরুরি।









