জিয়া ও মঞ্জুরের খুনি এরশাদ, বিচার হবে

0
128
Print Friendly, PDF & Email

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং মুক্তিযোদ্ধা ও সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল মঞ্জুর হত্যার জন্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সরাসরি দায়ী করলেন খালেদা জিয়া।

রোববার বিকেলে প্রেসক্লাবে বিএনপির গণঅনশন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জিয়া ও মঞ্জুর হত্যার জন্য এরশাদকে দায়ী করে খালেদা জিয়া বলেন,‘জিয়া ও মঞ্জুরের খুনি এরশাদ। তার বিচার হবে।

খুন, গুম-অপহরণ এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবিতে এই গণ-অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেয় বিএনপি।

বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে প্রেসক্লাবে স্থাপিত মঞ্চে পৌঁছে গণঅনশনে সংহতি জানান খালেদা জিয়া।

বিকেল পাঁচটার কিছুক্ষণ পর শুরু করা নিজের বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা ও সাবেক সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জর হত্যার সঙ্গে এরশাদ জড়িত।

এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য এরশাদের বিচার করারও অঙ্গীকার করেন খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে, নারায়ণগঞ্জের খুন ও গুমের জন্য সরকারকে দায়ী করে বলেন, সরকার ও সরকার দলীয় লোকজনই এসব খুন ‍ও গুমের সঙ্গে জড়িত।

তিনি বলেন, গুম ও খুন বিএনপির আমলে হয়নি। সিরাজ শিকদারকেও এভাবে হত্যা করা হয়েছিলো স্বাধীনতার পর।

তিনি বলেন, সরকারকে এসব গুম ও খুনের জবাব দিতে হবে। পাশাপাশি এ সব গুম ও খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচারের সম্মুখীন করে শাস্তি দেয়ারও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।

খালেদা জিয়া এ সময় দেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশে ভোট হয়নি। সারাদেশেই কোনো ভোট হয়নি। ঢাকা শহরের কেন্দ্রগুলোও ছিলো ফাঁকা।

‘যেখানে ৫ শতাংশ ভোটও পড়েনি সেখানে কিভাবে ৪০ শতাংশ ভোট পড়ে’ প্রশ্ন রাখেন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে ছিলো শুধু কুকুর আর পুলিশ।

বিরোধী দলের সদস্যরা মন্ত্রিসভার সদস্য হন কিভাবে প্রশ্ন রেখে খালেদা জিয়া বলেন, দেশে আজ একদলীয় শাসন চলছে, আরেক দিকে শোষণ।

নারায়ণগঞ্জে গুম ও খুনের প্রতিবাদে শনিবার সংসদ ভবনের সামনে সুশীল সমাজের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা দেয়ার ঘটনা তুলে ধরে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তাদের সেখানে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে দেয়নি। ব্যানার কেড়ে নিয়েছে।।

সকাল সোয়া ৯টার দিকে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় গণঅনশন কর্মসূচি।

অনশন শুরুর পর বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল। তিনি অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় ফুঁসে ওঠা মানুষদের ‘আই-ওয়াশ’ করতেই এতদিন পর অভিযান চালানো হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ ফুঁসে উঠেছে। তাদের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে নূর হোসেনের বাড়িতে অভিযান, কিন্তু এতদিন পরে কেন? তদন্তের নামে আই-ওয়াশ দিচ্ছে।

অনশনে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, এমকে আনোয়ার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, শমসের মবিন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, শামসুজ্জামান দুদু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, এনাম আহমেদ চৌধুরী, মুশফিকুর রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমুদ্দিন আলম, যুব বিষয়ক সম্পাদক ও যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক, মহিলা দলের সভাপতি নূরে আরা সাফা, সাধারণ সম্পাদক শিরীন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম ওবায়দুল হক নাসির, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. নেসারুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।

ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে কর্মসূচি পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম।

কর্মসূচিতে বিএনপি ছাড়াও ১৯ দলীয় জোটের শরীক দলের শীর্ষ নেতারা অংশ নিয়ে গণঅনশনে সংহতি প্রকাশ করেন।

শেয়ার করুন