খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে ব্যক্তিগত তথ্য!

0
172
Print Friendly, PDF & Email

আপনি ইমেইল, ফেসবুক, গুগল প্লাস ব্যবহার করেন, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে যান। হয়তো এর মধ্যেই গড়ে তুলেছেন ডিজিটাল সম্পদ বা ডিজিটাল ডাটার বিশাল ভান্ডার। এ তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে আপনাকে হয়তো অনেক সময় দুশ্চিন্তায়ও পড়তে হয়। কিন্তু ডাচ শিক্ষার্থী শন বাকল ব্যক্তিগত এসব তথ্য নিয়ে মোটেও চিন্তা করেননি। তিনি নিলাম ডেকে ৩৫০ ইউরোর বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছেন ব্যক্তিগত সব তথ্য। মার্কিন প্রযুক্তি-গবেষকেরা জানিয়েছেন, বাকলের সিদ্ধান্ত আমাদের সবার ব্যক্তিগত তথ্যের ভবিষ্যত্ নিয়ে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।

১২ এপ্রিল শন বাকল নিলামে তাঁর লোকেশন রেকর্ড, মেডিকেল রেকর্ড, ব্যক্তিগত ক্যালেন্ডার, ইমেইল ও সামাজিক যোগাযোগের সব কনটেন্ট, অনলাইনে আলোচনা, গ্রাহক হিসেবে পছন্দের বিষয়, ইন্টারনেট ব্রাউজ করার ইতিহাস প্রভৃতি তথ্য বিক্রি করেন। এই তথ্য কিনেছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট দ্য নেক্সট ওয়েব। একজন মানুষের ডিজিটাল সব ডাটাকে একসঙ্গে বলা হচ্ছে ‘ডাটা সোল’।

সম্প্রতি ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি নিয়ে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবলে প্রকাশিত হয়েছে একটি প্রতিবেদন।

ম্যাশেবলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শন বাকলের মতো অনেকেই প্রতিদিন অনলাইনে প্রচুর তথ্য উত্পন্ন করেন আর এ তথ্যগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের বিভিন্ন কাজে লাগায়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে অনলাইন বিজ্ঞাপন প্রদর্শন। সাধারণত অনেকেই তাঁদের ব্যক্তিগত এসব তথ্যের মূল্য বোঝেন না। শন বাকল ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রির কারণ হিসেবে এ যুক্তিই দেখিয়েছেন।

অবশ্য ব্যক্তিগত তথ্য কেনা-বেচার জন্য এখনো কোনো বাজার নেই। কিন্তু ব্যক্তিগত তথ্যের বিশাল ভান্ডার নিজের হাতে থাকলে তা দিয়ে কী করা যায়, তা গুগল ও ফেসবুক ইতিমধ্যে দেখিয়েছে। একজনের ব্যক্তিগত তথ্যের একটি প্যাকেজের দাম কত হওয়া উচিত এবং এই তথ্য কীভাবে ব্যবহার করা হবে, এ বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়।

ব্যক্তিগত তথ্য কেনা প্রসঙ্গে দ্য নেক্সট ওয়েব কর্তৃপক্ষের দাবি, অনলাইন প্রাইভেসির বিষয়টি তুলে ধরতেই তারা শন বাকলের ব্যক্তিগত তথ্য কিনেছে। তবে ব্যক্তিগত তথ্যের দাম ভবিষ্যতে কেমন হবে তা নির্ভর করছে এ ধরনের বাজার তৈরি এবং এসব তথ্যের সঠিক ব্যবহারের ওপর। স্বাস্থ্য, বিনোদন, বিমার মতো ক্ষেত্রগুলোতে এই ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যাপক প্রয়োজন হতে পারে। তাই ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রির জন্য এ ধরনের যদি কোনো বাজার তৈরি হয়, তবে মানুষ বিক্রির উপযোগী অনেক তথ্যই সংরক্ষণ করে রাখবে। অনেকেই সরাসরি অর্থের পরিবর্তে এই তথ্য অন্যান্য কাজে লাগাতে পারবেন। কেউ চাইলে দাতব্যপ্রতিষ্ঠানে এসব তথ্য দান করে দিতে পারবেন। দাতব্যপ্রতিষ্ঠানগুলো এগুলো গবেষণা বা অর্থকরী কোনো কাজে লাগাতে পারে।

প্রথমবারের মতো ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রির এ ঘটনা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যের যে একটা মূল্য আছে তা আমরা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছি কিন্তু এসব তথ্যের বিনিময়ে আমরা কী চাই, সেটা নির্ধারণ করতে পারিনি। এরই মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আমাদের ইন্টারনেট ব্রাউজ করার ইতিহাস জেনে তাদের ব্যবসার মডেল দাঁড় করিয়ে ফেলেছে।

আপনার সব ডিজিটাল তথ্য কী ৩৫০ ইউরোতে বিক্রি করবেন? শিগগিরই হয়তো আপনাকে এরকম সিদ্ধান্ত নিতে হতেই পারে!

শেয়ার করুন