এনজিও কর্মকর্তা অপহরণের ঘটনায় ডিবির দুই কন্সটেবল গ্রেফতার

0
865
Print Friendly, PDF & Email

বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) কর্মকর্তা মাইদুল ইসলামকে আজ বৃহস্পতিবার উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) দুই কনস্টেবল ও এক তথ্যদাতাকে গ্রেপ্তার করেছে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরেক পুলিশ কনস্টেবল পালিয়ে গেছেন।

গতকাল বুধবার বিকেলে মাইদুল ইসলামকে অপহরণ করা হয়েছিল।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন ডিবি পুলিশের কনস্টেবল আতিকুজ্জামান, কুড়িগ্রাম কোর্টে কর্মরত কনস্টেবল মামুনুর রশিদ ও ডিবির তথ্যদাতা (সোর্স) মনু মেকার।

মাইদুল ইসলাম পুলিশ ও সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে ছোট ভাই লিটনের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে সদরের কলেজপাড়া এলাকার এক ছাত্রাবাসে যান মাইদুল ইসলাম। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সেখান থেকে বাসায় ফেরার পথে কনস্টেবল আতিকুজ্জামান, মামুনুর রশিদ ও শাহ আলম এবং ডিবি পুলিশের এসআই মশিউরের তথ্যদাতা মনু মেকার অস্ত্রের মুখে তাঁকে অপহরণ করেন। অপহরণের পর মাইদুলকে সদরের মোগলবাসা এলাকার একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়। মুক্তিপণ হিসেবে তাঁর কাছে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। দর কষাকষি শেষে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নির্ধারণ করা হয়। পরে অপহরণকারীদের নির্দেশমতো মাইদুল ইসলামের ছোট ভাই লিটন মুক্তিপণের ১০ হাজার টাকা বিকাশ করে পাঠিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর থানায় মাইদুলের পরিবার অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ অভিযানে নামে। কুড়িগ্রাম পৌর বাজারের বিকাশ এজেন্ট শহিদের দোকানে পুলিশ সাদা পোশাকে অবস্থান নেয়। একই সঙ্গে পুলিশের দুটি টিম সদরে সাঁড়াশি অভিযানে নামে।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, মনু মেকার বিকাশের টাকা তুলতে যাওয়ার সময় তাঁকে অনুসরণ করে পুলিশ। রাত ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল মোড় এলাকায় মনু মেকারের দোকানে মুক্তিপণের টাকা ভাগাভাগির সময় এসআই আবদুল গফুরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সেখানে হানা দেয়। এ সময় হাতেনাতে আতিকুজ্জামান, মামুনুর রশিদ ও মনু মেকারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ আর কনস্টেবল শাহ আলম পালিয়ে যান। ঘটনার পর রাত একটার দিকে অপহূত মাইদুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি হেঁটে রাত দুইটায় শহরে যান। অপহরণের আট ঘণ্টা পর মাইদুল ফিরে আসায় স্বজনদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবদুল গফুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অপহূত মাইদুলের ছোট ভাই লিটন বাদী হয়ে আজ দুপুরে কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলা করেছেন।

ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আতিকুজ্জামান, মামুনুর রশিদ ও মনু মেকারকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ মামলায় পলাতক শাহ আলমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, এটি অপহরণ নয়, স্রেফ চাঁদাবাজি। পুলিশি তত্পরতায় তা ভেস্তে গেছে। পুলিশ শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে পুলিশের দুজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।

শেয়ার করুন