‘জনগণের নিরাপত্তায় রাস্তায় নামব, সাংগঠনিক রেড এলার্ট জারি করছি’

0
123
Print Friendly, PDF & Email

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, “একের পর এক মানুষকে অপহরণ করা হচ্ছে। আর কিছু দিন পর তাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। এখন নদীতে লাশ, বনে লাশ, জঙ্গলে লাশ; চারিদিকে শুধু লাশ লাশ।”
বিশ্ব শ্রমিক দিবস উপলক্ষে আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেছেন, “দেশে আজ কোনো মানুষ নিরাপদ নয়। সাদা পোশাকে মানুষকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দেশে খুন-গুম-অপহরণ আওয়ামী লীগই করছে।”
সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, “এ সরকারের কাছে বিচার চেয়ে লাভ নেই। তারাতো খুন-গুম-অপহরণ নিজেরাই করছে। ফলে তারা বিচার করতে পারবে না। এখন প্রয়োজন এখন সামনে এগিয়ে যাওয়ার। প্রয়োজন আন্দোলন করা। এখন গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমি জনগণের নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় নামব। আমি নামতে চাইলে আওয়ামী লীগ আমার বাসার সামনে পুলিশ আর বালুর ট্রাক দিয়ে আমাকে আটকে দেয়। তারপরও খুনীদের হাত থেকে দেশ বাঁচাতে আমি মাঠে নামব।”
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বিএনপি নেতাকর্মীদের সতর্ক ও প্রস্তুত থাকতে হবে। আমি সারাদেশে সাংগঠনিক রেড এলার্ট জারি করছি। যারা খুন-গুমের সাথে জড়িত তাদের ঘেরাও করে আটকে রাখবেন। ওই সব লোককে পুলিশে দেবেন।”
খালেদা জিয়া বলেন, “আওয়ামী লীগ হলো ক্রীতদাস। মুনিব যা বলে তাকে যতো অন্যায়ই হোক তা করতে হবে। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হলো আর দেশ এখন ক্রীতদাসের হাতে। ফেলানীর লাশ যখন কাটাতারে ঝুলে, সীমান্ত থেকে যখন বাংলাদেশীদের ধরে নিয়ে যায়, আমাদের নদীর পানি যখন আটকে দেয়া হয় তখন এই ক্রীতদাস সরকার প্রতিবাদ করতে পারে না। তাদের সেই সাহস নেই।”
তিনি বলেন, সরকার গ্যাস দিতে পারে না, বিদ্যুৎ দিতে পারে না, পানি দিতে পারে না। শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই অবৈধ ও ক্রীতদাস সরকার ক্ষমতায় থাকলে এই অবস্থা চলতে থাকবে। তাই তাদের বিদায় করতে হবে।
খালেদা জিয়া বলেছেন, “দেশে এখন শুধু আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা সুখে আছেন। কারণ তারা লুটপাট করছে। আওয়ামী লীগের ২২৬ এমপি কোটিপতি। ৩০০ এমপির মধ্যে ২৪২ জন কর দেন না।”
তিনি বলেন, তারা কথায় কথায় জঙ্গি বলে। নামাজ পড়লে, টুপি পড়লে, দাঁড়ি রাখলে তারা জঙ্গি বলে। আর এখন দেখা যায় তাদের লোকই জঙ্গিদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই হল আওয়ামী লীগ। ময়মনসিংহে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় যুবলীগ নেতার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি আমার কথা নয়, পত্রিকায় এসেছে এ ঘটনার পরিকল্পনা ছিল যুবলীগের এক নেতার। এদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের।
খালেদা জিয়া বলেন, “লম্বা জামা আর মাথায় টুপি পড়লেই জঙ্গি হয় না। এটা মুসলমানের পোশাক। সবচেয়ে বড় জঙ্গি আবদুর রহমানকে আমরাই গ্রেফতার করেছি। আবদুর রহমান কে? আবদুর রহমান কার দুলাভাই, মির্জা আজমের। মির্জা আজম কি আওয়ামী লীগ করে না বিএনপি করে?”
আলোচনা করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “অবৈধ সংসদ ভেঙে দিন। এই সংসদ বৈধ নয়। এখানে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হয়েছে। অন্যরাও ৫ ভাগ ভোটের এমপি। তাদেরকে নির্বাচিত বলা যায় না।”
সমাবেশে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল নোমান। সংগঠনের নবনির্বাচিত সভাপতি মো. আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, প্রমুখ।

শেয়ার করুন