ভারতের হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, “নিজেকে শের ভাববেন না; বাংলায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে।“
মঙ্গলবার কোলকাতায় বড়বাজার, রাজাবাজার ও বেলেঘাটায় তিনটি নির্বাচনী জনসভায় মমতা অভিযোগ করেন, রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি আমদানি করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। সাম্প্রদায়িকতার আগুন জ্বালিয়ে দেশকে টুকরো করতে চাচ্ছেন তিনি।
মমতা আরো বলেন, “ভোটের সময় এলে বাঙালি-অবাঙালি ভাগ করে বিজেপি। আমরা বিভাজনের রাজনীতি করি না, বিভাজন করে ভোট চাই না। যে লোক মানুষকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুড়িয়ে মারে, তার কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই, তাকে মানুষ ক্ষমা করবে না।“
রোববার শ্রীরামপুরের সভা থেকে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে হুঁশিয়ারি দেন মোদী। ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশি ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ বিতাড়নের কথা বলেন তিনি। এই ইস্যুতে মোদীর সমালোচনা করে মমতা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হয়েই এ সব কথা! সত্যি সত্যি প্রধানমন্ত্রী হলে কী করবেন? আগুন জ্বালিয়ে দেবেন? নিজেকে শের ভাববেন না, বাংলায় সবচেয়ে বড় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে।”
মমতা দাবি করেন, “এবার কেন্দ্রে কংগ্রেস বা বিজেপি একা সরকার গড়তে পারবে না। আঞ্চলিক দলগুলোই সরকার গড়বে। দেশে আম জনতার সরকার দরকার, যারা সব সম্প্রদায়ের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মমতা ব্যানার্জি যে মন্তব্য করেছেন, তাতে ব্যক্তিগত আক্রমন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি।
প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগপত্রে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ‘কুরুচিকর’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক সুধীর কুমার রাকেশের কাছেও এ বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল রোববার রাতে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে সংগীতশিল্পী বাপ্পী লাহিড়ীর এক নির্বাচনী জনসভায় মোদী বলেছিলেন, “মমতা ভীষণ লোভী। বামেদের পথে হাঁটছে। তাই কংগ্রেস, বাম ও তৃণমূল-এই চক্রের বাইরে যেতে হবে বাংলাকে। আমার সঙ্গে থাকুন। আমি আপনাদের স্বরাজ দেব।”
এর জবাবে সোমবার কোলকাতার নবান্নে প্রবেশদ্বারের কাছে এক সংবাদ সম্মেলনে মমতা অভিযোগ করেন, “জাতপাতের নোংরা রাজনীতি করছেন মোদী। বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন। বাংলাকে বাঙালি-অবাঙালিতে ভাগ করতে চাইছেন। দাঙ্গা লাগিয়ে পালিয়ে যেতে চাইছেন। ভয়ঙ্কর কালো দিনের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। কিন্তু বাংলায় তা কোনোভাবেই সফল হবে না।”
মোদীর নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, “গুজরাটের দুর্ভাগ্য একটা শয়তান, ডেঞ্জারাস লোক বসে আছে। এই মানুষ যদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হন দুঃসহ, ভয়ঙ্কর কালো দিন আসবে। এই মানুষ যদি চেয়ারে বসেন তাহলে অন্ধকূপ হত্যার ঘটনা ঘটবে। সারা দেশটাকে জ্বালিয়ে দেবেন।”
