টিকফার প্রথম বৈঠক শুরু: বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হবে না- বিশেষজ্ঞ অভিমত

0
222
Print Friendly, PDF & Email

পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ ও আমেরিকার মধ্যে টিকফা চুক্তির (ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট) প্রথম বৈঠক আজ ঢাকায় শুরু হয়েছে।
আজ (সোমবার) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আমেরিকার একটি প্রতিনিধি দলের মধ্যে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ। মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি মাইক ডিলানি।
বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়তা বাড়ানোর জন্য গত বছরের নভেম্বরে এই টিকফা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এ বছরের ৩০ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হয়েছে।
চুক্তিতে বলা হয়, এর ফলে সম্প্রসারিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ হবে এবং এ থেকে লাভবান হবে উভয় দেশ।
চুক্তি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে একটি ফোরাম গঠন করা হয়েছে। এই ফোরামেরই প্রথমবারের বৈঠক শুরু হয়েছে আজ। এর আগে রোববার বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সাথে একটি বৈঠক হয়েছে।
টিকফা চুক্তি প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, “আফ্রিকার অনেকে দেশে ডিউটি-ফ্রি কোটা-ফ্রি সুবিধা থাকলেও বাংলাদেশে তা না থাকার বিষয়টি প্রতিনিধি দলের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।”
প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে দাবি জানানো হয়।
তবে, শুরু থেকেই টিকফা চুক্তি বিরোধীতাকারী বাম রাজনৈতিক সংগঠন বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন রেডিও তেহরানকে বলেন, সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার সঙ্গে যে কোনো চুক্তিতে বাংলাদেশের মতো দেশের স্বার্থ দেখা হয় না বরং মার্কিনী স্বার্থই রক্ষা হয়।
তিনি উল্লেখ করেন, মুক্তবাজার আর্থনীতির কথা বলেও মার্কিনীরা তাদের দেশে পণ্য রপ্তানির বেলায় অন্যদের শুল্ক সুবিধা দেয় না। বাংলাদেশ যে পরিমাণ শুল্ক আমেরিকাকে দেয় তার পরিমাণ বাংলাদেশকে তাদের দেয়া সাহায্যের চেয়ে বেশী।
রাজেকুজ্জামান মনে করেন, বর্তমান টিকফা বৈঠকে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ তো রক্ষা হবেই না বরং ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরো কিছু নিয়ন্ত্রণের জালে আটকা পড়বে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থা বা ডব্লিউটিও’র কাঠামোর মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তার বাণিজ্য সমস্যার দেনদরবার করতে পারে। তা না করে টিকফার মাধ্যমে নিজেকে আমেরিকার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বলয়ে নিজেকে আটকে ফেলেছে বাংলাদেশ।
তিনি মনে করেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে গঠিত সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে চায় শেখ হাসিনার সরকার; আর মার্কনীরাও এ সূযোগে তাদের নানাবিধ স্বার্থ আদায় করে নিতে চাচ্ছে।
দেশের সচেতন মহল মনে করেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে মার্কিন বা তাদের সহযোগী পশ্চিমাগোষ্ঠীর সাথে গাটছাড়া বেঁধে কোনো দেশের সরকার ক্ষমতায় বেশিদিন স্থায়ী হতে পারে না। বরং তাতে সেই সরকারের বিরুদ্ধে গণরোষ আরো তীব্র হতে থাকে।

শেয়ার করুন