সেন্টমার্টিনে কোস্টগার্ডের গুলিতে নিহত ৩

0
465
Print Friendly, PDF & Email

সেন্টমার্টিন সমুদ্র উপকূলে কোস্টগার্ডের গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো কয়েকজন। শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের ‘ইয়াবা ব্যবসায়ী’ বলে দাবি করেছেন কোস্টগার্ড। তবে ওই ট্রলারে ফিরে আসা কয়েকজন দাবি করেছেন, তারা ইয়াবা ব্যবসায়ী নন। নিজেদের জেলে বলে জানান তারা।
নিহতরা হলেন, মোহাম্মদ কালু, জহিরুল আলম ও ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ আমিন। এদের মধ্যে মোহাম্মদ আমিন টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, মোহাম্মদ কালু মহেশখালী উপজেলা ও জহিরুল আলম কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
জানা গেছে, ট্রলারে থাকা ১৪ জনের মধ্যে ছয়জন ফিরে আসতে সক্ষম হয়। তবে অন্যরা নিখোঁজ রয়েছেন। ফিরে আসাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ দীল মোহাম্মদকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার বাড়ি কক্সবাজার শহরতলীর সমিতিপাড়ায়।
কোস্টগার্ড সূত্র মতে, ইয়াবার চালান নিয়ে টেকনাফ অভিমুখী ইঞ্জিন চালিত একটি বোটকে থামতে সংকেত দেয়া হয় কিন্তু বোটে থাকা ইয়াবা ব্যবসায়ী কোস্টগার্ড সদস্যদের ইট পাথর ছুঁড়ে মারে। পরে কোস্টগার্ড গুলিবষর্ণ করে। বোটটি দ্রুত মিয়ানমার জলসীমায় প্রবেশ করে। তাদের লাশ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে একটি ইঞ্জিল চালিত নৌকায় করে কক্সবাজার বাঁকখালী নদীর ৬ নং জেটিঘাটে নিয়ে আসা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশগুলো উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফাইল আহমেদ জানান, আমরা আজ শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত যতগুলো লিঙ্ক পেয়েছি তাতে আমরা নিশ্চিত নিহতরা সকলে ইয়াবা ব্যবসাসী এবং তাদের দুই জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের একজন হচ্ছে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের আমিন মাঝি ও মহেশখালীর মোহাম্মদ কালু। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মোহাম্মদ হোসেন নামের অপর এক ইয়াবা ব্যবসায়ী জেলা সদর হাসপাতালে চিকিসাধীন রয়েছেন বলে জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান।
তিনি আরো জনান, দ্বীন মোহাম্মদ নামের অপর এক ইয়াবা ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ মোহাম্মদ হোসেনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
জীবিত ফিরে আসাদের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ হোসেন, দীল মোহাম্মদ, রহমত উল্লাহ, আলী জোহার ও সুলতান আহমদ। কক্সবাজার সদর থানা পুলিশ জীবিত ফিরে আসা ছয়জনকে আটক দেখিয়েছে। কোস্টগার্ড এই ঘটনায় এজাহার দিচ্ছে বলেও পুলিশ সূত্র দাবি করেছেন।
জীবিত ফিরে আসা রহমত উল্লাাহ নিজেদের জেলে দাবি করে জানান, চট্টগ্রামের শওকত হোসেনের মালিকানাধীন একটি মাছধরার ট্রলার নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে তারা ১৪ জন মাঝি-মাল্লা কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া ফিসারি ঘাট এলাকা থেকে মাছ শিকারে সাগরে যাত্রা করেন। শুক্রবার ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছাকাছি ছেঁড়াদিয়া (ছেঁড়া দ্বীপ) এলাকার মাঝ সমুদ্রে তাদের গুলিবর্ষণ করে কোস্টগার্ড।
তিনি আরো জানান, ওই ট্রলারের ১৪ মাঝি-মাল্লার মধ্যে পাঁচজন সাগরে ঝাপ দেন। পরে আর তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। অন্যদের নিয়ে ট্রলারটি কক্সবাজারের দিকে যাত্রা করে। দীর্ঘ সময় ধরে ট্রলার চালিয়ে তারা শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের পেশকার পাড়া এলাকায় পৌঁছেন।

শেয়ার করুন