বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ইয়াবাসহ বিভিন্ন সময় কয়েকবার আটক হয়ে জেলও খেটেছেন তিনি।
সর্বশেষ গত ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখে ইয়াবাসহ ধরা পড়ে এক মাস সাত দিন জেল খেটেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র বলছে, নিজেকে রক্ষা করতে অভিনব কৌশল হাতে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান। থানায় নিজের নাম সঠিক বললেও বাবার নাম মিথ্যা বলেছেন। যদিও ইয়াবাসহ পুলিশ তাকে আটক করার পর জেল খেটেছেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর থানা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আগামী ৭ মে মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মূলত চাকরি বাঁচাতে ও পুলিশের মামলা থেকে রেহাই পেতে এই অভিনব চাতুরির আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।
সূত্র জানায়, মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উপপরিচালক। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই এই পরিচয় গোপন রেখে ইয়াবা ব্যবসা করছে যাচ্ছেন তিনি। এর আগেও তিনি কয়েকবার র্যাব ও পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন।
সূত্র বলছে, সব শেষ গত ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখে মিরপুর থানা পুলিশ তাকে ইয়াবাসহ আটক করে। পরে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয় এবং পুলিশবাদী হয়ে একটি মামলা করে (যার নম্বর ০৬/৩/১২/২০১৩) এবং মোস্তাফিজুর রহমানকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
কিন্তু, মোস্তাফিজুর রহমান নিজেকে বাঁচাতে চাতুরির আশ্রয় নিয়ে তার বাবার নাম মিথ্যা বলেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার গোয়াবাড়ীয়া গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জমা দেওয়া তার নথিপত্র থেকে দেখা গেছে, তার বাবার নাম উলফাত হোসেন। কিন্তু, মিরপুর থানা পুলিশকে জানান, তার বাবা গুলজার হোসেন। তবে ঠিকানা সবকিছু একই বলেন। গোপন রাখেন পেশাগত জীবনের কথা।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজালাল আলম বৃহস্পতিবার টেলিফোনে বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আসামির দেওয়া তথ্য তার গ্রামের থানা কুষ্টিয়ার মিরপুরে যাচাই-বাছাই করতে পাঠিয়েছি। সেখানে কোনো ধরনের মিথ্যা তথ্যের প্রমাণ পাওয়া গেলে সাজার পরিমাণ আরো বাড়বে।
পুলিশ বিষয়টি জেনেও এমনটি করেছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন অভিযোগ ঠিক নয়।
জানা গেছে, ৩ ডিসেম্বর মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার দিন রাত ১১টা ৫০ মিনিটে ২০০ পিস ইয়াবাসহ আটক হন। তবে পুলিশের সঙ্গে যোগসাজস করেন এই কর্মকর্তা। ফলে ২০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার হলেও মামলার এজাহারে ২০ পিস বলা হয়।
সূত্র বলছে, শুধু ইয়াবা ব্যবসাই নয়, মোস্তাফিজুর রহমান বাসায় নারী ব্যবসাও চালাতেন। ধানমণ্ডিতে তিনি তার লন্ডনপ্রবাসী বোনের বাসায় নারীদের নিয়ে এই অবৈধ ব্যবসা গড়ে তোলেন। পরে তার ভগ্নিপতির হয়ে তার ছোটভাই ২০১১ সালের মার্চ মাসের ২৮ তারিখে এই ঘটনায় ধানমণ্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (ডায়েরি) করেন এবং বাসা থেকে বের করে দেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকও কয়েক দফা তাকে সতর্ক করে দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংক তার কৃতকর্মের কথা জানতে পেরে সাময়িক বরখাস্ত করে। পদাবনতিও দিয়েছে।
নানাবিধ অভিযোগের বিষয়ে জানতে কয়েক দফা মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।