দলীয় শিক্ষক নিয়োগই ‘কাল হলো’ সাদা দলের

0
184
Print Friendly, PDF & Email

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি, সিন্ডিকেট ও ডিন নির্বাচনে ৫৪ পদের মধ্যে ৪৮টিই হারিয়েছে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক গ্রুপ (সাদা দল)। আওয়ামীপন্থীদের দলীয় বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ দেয়াকেই তাদের এই পরাজয়ের মূল কারণ হিসেবে দেখছেন সাদা দলের শিক্ষকরা।  
সংগঠনটির আহবায়ক শামসুল আলম সরকার শুক্রবার এই নির্বাচনে তাদের পরাজয়ের কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, গত পাঁচ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় বিবেচনায় কমপক্ষে চারশ’ শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে আওয়ামীপন্থী প্রশাসন। এই নির্বাচনে পরাজয়ের কারণগুলোর মধ্যে শিক্ষক নিয়োগই প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। যেসকল শিক্ষক তাদের দ্বারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা সাধারণতই আওয়ামীপন্থীদের ভোট দিয়েছেন। এছাড়া নিজেদের মধ্যে দলীয় কোন্দলও কাজ করেছে বলে মনে করেন এই শিক্ষক নেতা।
তিনি জানান, সিন্ডিকেটে পাঁচটি পদের মধ্যে একটি, আটটি অনুষদের ডিন পদের মধ্যে একটি, শিক্ষা পরিষদের ছয়টি পদের মধ্যে একটি এবং শিক্ষক প্রতিনিধিদের মোট ৩৩টি পদের তিনটি পদে সাদা প্যানেল জয়লাভ করে।   
সাদা দলের আহবায়ক আরো বলেন, নির্বচনে বেশি পদ না পেলেও ভোটের ব্যবধান বেশি নয়। যেখানে হলুদ প্যানেল ৫০০ ভোট পেয়েছে, সেখানে আমারা ৪৮০ থেকে ৪৯০ ভোট পেয়েছি। প্রায় সব কয়টি পদেই এমন ব্যবধানে হার হয়েছে আমাদের।
জানা যায়, ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাবির উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এম আব্দুস সোবহান। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি ৭৩-এর অ্যাক্ট লঙ্ঘন, বিভাগীয় সভাপতি ও প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিষেদ্ধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দলীয় বিবেচনা এবং অর্থের বিনিময়ে শূন্য ও বিজ্ঞাপিত পদের বিপরীতে তিনগুণ বা কেনো কোনো ক্ষেত্রে পাঁচগুন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। তৎকালীন প্রশাসন ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ২৩০ টি পদের বিপরীতে ৩৬৫ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। এরপর ২০১৩ সালের প্রথম দিকে বর্তমান উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন ক্ষমতা গ্রহণের পর দীর্ঘ দিন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকলেও গত ১৫ এপ্রিল ৪৫১ তম সিন্ডিকেটে ৬টি বিভাগে মোট ২৬ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এন্তাজুল হক নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন। এতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষকরা দাপুটে জয় পায়।

শেয়ার করুন