পদ্মা সেতু প্রকল্পের অধীন মূল সেতু নির্মাণের দরপত্রে একটি মাত্র কোম্পানি আর্থিক প্রস্তাব জমা দিয়েছে।
চায়না মেজর ব্রিজ মূল সেতু নির্মাণে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা দর প্রস্তাব করেছে। একমাত্র প্রতিষ্ঠান হওয়ায় চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানিই প্রকল্পের কাজ পেতে যাচ্ছে বলে সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এর ফলে মূল সেতু আরও কম মূল্যে করা সম্ভব কি না, সে ধরনের প্রতিযোগিতার আর সুযোগ থাকছে না।
আর্থিক প্রস্তাব জমা দেওয়ার বর্ধিত সময়সীমা অনুযায়ী শেষ দিন ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। এর আগে ৩ এপ্রিল প্রস্তাব জমা দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুরোধে সময় বাড়ানো হয়।
গতকাল সেতু ভবনে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ও ডেইলেম নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর্থিক প্রস্তাব দেওয়ার সময়সীমা ১০ ও ১১ সপ্তাহ বৃদ্ধির আবেদন করেছিল। কিন্তু প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি সময় বৃদ্ধির বিপক্ষে অভিমত দেয়। এখন চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আর্থিক প্রস্তাব পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মনসেল এইকম ও স্থানীয় কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি যাচাই-বাছাই করবে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মূল সেতুর দরপত্রে এর আগে চারটি প্রতিষ্ঠান প্রাকযোগ্য হয়। এগুলো হচ্ছে: দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ও ডেইলেম, চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং ও ফ্রান্সের ভিন্সি। বিশ্বব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রাকযোগ্য বিবেচনা করা হয়। এরপর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিলে ভিন্সি অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
সেতু বিভাগের পক্ষ থেকে বাকি তিনটি প্রতিষ্ঠানকে কারিগরি প্রস্তাব জমা দেওয়ার আহ্বান জানালে সবাই সাড়া দেয়। চূড়ান্ত অর্থাৎ আর্থিক প্রস্তাবে গতকাল আর অংশ নেয়নি স্যামসাং ও ডেইলেম।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, দুটি বড় প্রতিষ্ঠান অংশ না নেওয়ায় মূল সেতুর দরে প্রতিযোগিতা হয়নি। সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে দর কমও হতে পারত।
সরকার ২০১০ সালে মূল সেতুর জন্য ব্যয় প্রাক্কলন করেছিল প্রায় সাড়ে নয় হাজার কোটি টাকা। সে সময় পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ২৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। সম্প্রতি মূল সেতুর প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বাড়িয়েছে সেতু বিভাগ।
এখনো নদী শাসনের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ হয়নি। সূত্র জানায়, নদী শাসনেও ব্যয় বাড়বে। সে ক্ষেত্রে পুরো প্রকল্পের ব্যয়ই বেড়ে যাবে কয়েক হাজার কোটি টাকা। নদী শাসনের ঠিকাদার নিয়োগ হলেই পদ্মা প্রকল্পের সব ঠিকাদার নিয়োগ হয়ে যাবে। তখন মূল প্রকল্প প্রস্তাবটি আবার সংশোধন করা হবে।