৫০! বিশ্বকাপ, দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের পর্দা ওঠার আর মাত্র ৫০ দিন বাকি। দুরু দুরু বুকে ফুটবলপ্রেমীরা ক্ষণগণনা শুরু করে দিয়েছেন নিশ্চয়ই। শুরু হলো প্রথম আলো অনলাইনেরও ‘কাউন্ট ডাউন’। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে ক্ষণগণনা নিয়ে একটি বিশেষ রচনা থাকবে। আজ থাকছে ‘৫০’ সংখ্যাটি নিয়ে—ঘিগিয়ার হাতে জার্সি নম্বর ৫০! মানেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন!৫০—এ সংখ্যাটি হয়তো কখনোই ভুলতে পারবে না ব্রাজিল। ‘৫০’ মানে যে তাদের কাছে হাহাকারের প্রতিশব্দ। ১৯৫০ বিশ্বকাপের দুঃখ কি কখনো ভুলতে পারবে ব্রাজিল?
বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দল ব্রাজিল তাদের পাঁচ শিরোপার প্রথমটি জিতেছিল ১৯৫৮ সালে। অথচ সেটি আসার কথা ছিল আরও আট বছর আগেই। ১৯৫০ বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল ব্রাজিল। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের স্বাগতিক হয়েছিল তারা। এটাই প্রথম ও একমাত্র বিশ্বকাপ ছিল, যেটিতে কোনো ফাইনাল ম্যাচ হয়নি। হয়েছিল ফাইনাল রাউন্ড। যে রাউন্ডে খেলেছিল চারটি দল—ব্রাজিল, উরুগুয়ে, সুইডেন ও স্পেন।
এই চার দলই পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল। তিন ম্যাচ থেকে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট যে পাবে, সেই চ্যাম্পিয়ন। শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল উরুগুয়ে ও ব্রাজিল। সমীকরণটা ছিল এমন, আগের দুই ম্যাচে দুই জয়ে চার পয়েন্ট পাওয়া ব্রাজিল এই ম্যাচ ড্র করে এক পয়েন্ট পেলেও জিতে যাবে বিশ্বকাপ। আর দুই ম্যাচে এক জয় ও এক ড্রয়ে তিন পয়েন্ট পাওয়া উরুগুয়েকে জিততেই হবে ম্যাচটা। উরুগুয়ের চাই জয়, ব্রাজিলের ড্র।
স্বাভাবিকভাবেই ব্রাজিলকে চ্যাম্পিয়ন ধরেই নিয়েছিল সবাই। ব্রাজিলের পত্রিকাগুলোতে আগাম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়েছিল দলকে। সবাইকে নিতে বলা হয়েছিল উত্সবের প্রস্তুতি। একে তো ড্র চাই, তার ওপর ম্যাচটা নিজেদের মাঠে খেলবে ব্রাজিল। পেছনে থাকবে লাখো সমর্থকের সমর্থন। লাখ মানে? ১৬ জুলাইয়ের ম্যাচটি দেখতে মারাকানায় ভিড় করেছিল দুই লাখ দর্শক!
প্রথমার্ধ গোলশূন্য। দশর্কের চিত্কার বাড়ছে। ৪৭ মিনিটে ফ্রিআকার গোলে এগিয়ে গেল ব্রাজিল। দর্শকের চিত্কার যেন আকাশ কাঁপিয়ে দিল। ৬৫ মিনিট পর্যন্ত স্কোরলাইন ১-০। আর মাত্র ২৫ মিনিট, এরপরই শুরু হবে সাম্বা উত্সব।
কিন্তু ৬৬ মিনিটে স্কিয়াফফিনোর গোলে সমতা ফেরাল প্রথম বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নরা। হোক, তবুও তো ক্ষতি নেই। ড্র হলেও তো চলবে। কিন্তু না, ৭৯ মিনিটে আলসিদেস ঘিগিয়া করলেন ফুটবল বিশ্বকাপের সবচেয়ে আলোচিত গোলগুলোর একটি। ২-১ গোলেই জিতল উরুগুয়ে! উত্সবের দেশ ব্রাজিল হয়ে গেল শোকের জনপদ!