নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার পাঁচবাড়িয়ায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বিএনপি সমর্থিত তিন পরিবারের সদস্যদের পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে গৃহবধূ আসমা খাতুন (২৮) দগ্ধ হন। শুক্রবার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দায়ী করেছে বিএনপি।
এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার রাত ১টার দিকে পাঁচবাড়িয়া গ্রামের বিএনপি কর্মী সাজদার শাহ, আজিজ শাহ ও রবিউল শাহ’র বাড়িতে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তাদের কান্নাকাটি শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে ঘরের বেড়া কেটে তাদের বের করেন। এ সময় রবিউল শাহ’র স্ত্রী আসমা অগ্নিদগ্ধ হন। অগ্নিকাণ্ডে নগদ এক লাখ ৬০ হাজার টাকা, তিন ভরি স্বর্ণ, একটি গরু, ২০টি মুরগী, আসবাবপত্র, কৃষিপণ্যসহ তিনটি বাড়ির ১০টি ঘরের কমপক্ষে ১২ লাখ টাকাগ্মালামাল পুড়ে গেছে। পরে দয়ারামপুর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিদগ্ধ আসমাকে বড়াইগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় দারুণ উত্তেজনা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ওই গ্রামে আওয়ামী লীগ কর্মীরা পাঁচ বিএনপি কর্মীকে পিটিয়ে আহত করে।
ক্ষতিগ্রস্থ সাজদার শাহ জানান, বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ কর্মীদের মারপিটের কারণে কোনো পুরুষ মানুষ বাড়িতে ছিল না। এর আগে তারা বাজারে সবার সামনে আমার বাড়িঘর পুড়িয়ে ভিটে ছাড়া করার হুমকি দেয়। রাতে বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় তারাই আমাদের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে।
নগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক সাজদার রহমান বলেন, বুধবার ওই গ্রামে সমাবেশে স্থানীয় এমপিসহ নেতৃবৃন্দের হিংসাত্মক বক্তব্যে উৎসাহিত হয়ে আওয়ামী লীগ কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে বিএনপি কর্মীদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের মণ্ডল এ ঘটনার সাথে তাদের কর্মীরা জড়িত নয় বলে দাবি করেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ফায়ার সার্ভিস কর্মী জানান, পুড়ে যাওয়া ঘর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী আরো কয়েকটি ঘরের বেড়ায় পেট্রোল দেয়ার আলামত পাওয়া গেছে।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।