চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ৬নং ইছাখালী গ্রামে জন্ম নেয়া নিউইয়র্ক প্রবাসী জয়নাল আবেদীন সততার কারণে নিউইয়র্কে প্রসংশিত হয়েছেন। নিউইয়র্কে এ কথা জানাজানি হলে জয়নালের সততার কারণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল হয় নিউইয়র্ক বাসীর কাছে।
গতকাল জয়নাল এ ঘটনা জানিয়ে নয়া দিগন্তকে বলেন, গত ১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার জ্যাকসন হাইটসের ‘সোনা চাঁন্দি’ স্বর্ণের দোকানে সোনা কিনতে গিয়ে এক অসাধারণ সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি তার সহধর্মিনী আসমা আবেদীনসহ স্বর্ণ ক্রয়ের জন্য জ্যাকসন হাইটসের সোনা চাঁন্দি স্বর্ণের জুয়েলারী দোকানে যান। সেখানে কয়েক হাজার ডলারের স্বর্ণ কেনার পর দোকানের কর্মচারীর কাছে অতিরিক্ত একটি খালি বক্স চান। কর্মচারীদের একজন তাদের একটি খালি বক্স দেন। তারা জ্যাকসন হাইটসের আনুসাঙ্গিক বাজার শেষ করে বাসায় ফিরেন আনুমানিক রাত ৯ টায়। জয়নাল আবেদীন নিজের কেনা স্বর্ণ ঘরে থাকা তার শাশুড়ীকে দেখাতে গিয়ে দেখেন, তাদের কেনা স্বর্ণ যথাযথ আছে, কিন্তু খালি বক্সে প্রায় ১৩ ভরি ওজনের সোনার নেকলেস। এ খালি বক্সে এতবড় নেকলেস দেখে তিনি অবাক হন। পরদিন স্ত্রীসহ জ্যাকসন হাইটসে সোনা চাঁন্দিতে নেকলেস নিয়ে হাজির হন। তখনও দোকান খুলেনি। তিনি দীর্ঘ দেড়ঘণ্টা অপেক্ষার শেষে দোকান খোলার পর কর্মচারীদের নিকট ঘটনা খুলে বলে নেকলেস ফিরত দেন। এতে তারা আর্শ্চায্য হয়ে দম্পতিকে ধন্যবাদ জানান এবং তাদের সততার প্রসংসা করেন।
তিনি স্বর্ণের দোকানের মালিককে না জানিয়ে নেকলেসটি ফিরত দেন। এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন, স্বর্ণ ক্রয়ের সময় যে দুইজন কর্মচারী ছিলেন তারা বাংলাদেশি। ভুলে তারা আমাকে নেকলেস ভর্তি বক্স, খালি মনে করে দিতে পারে। আমি যদি মালিককে ঘটনাটা জানাতাম হয়ত: বাহবাহ পেতাম। এর ফলে মালিক ক্ষিপ্ত হয়ে দুই বাঙ্গালী কর্মচারীকে চাকুরী থেকে বাদ দিতে পারে, সেই চিন্তা থেকে মালিককে জানাইনি। জয়নাল আবেদীন বলেন, এ ঘটনাটা আমার এলাকার পরিচিত বেলাল হোসেনকে জানাই। বেলাল গত ১৪ এপ্রিল একই দোকানে স্বর্ণ কিনতে গিয়ে ওইদিনের নেকলেসের ঘটনা মালিককে জানান। মালিক আমার প্রতি সন্তুষ্টি হয়ে বেলালের কাছে ৫০ ডলার পুরস্কার পাঠিয়েছেন। তিনি মালিকের দেয়া পুরস্কার সবিনয়ে প্রত্যাখান করে বলেন, এটা আমার নৈতিক দায়িত্ব পালন করেছি। এর জন্য কোনো পুরস্কারের প্রয়োজন নেই।
জয়নাল আবেদীন ২৮ বৎসর ধরে নিউইয়র্ক প্রবাসী। পেশায় এমটিএ কর্মকর্তা। পরিবারসহ নিউইর্য়ক সিটির ওজনর্পাকে বসবাস করেন