মোবারকের পথেই মিসরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

0
137
Print Friendly, PDF & Email

ত্রিশ বছরের স্বৈরশাসক হোসনে মোবারকের দেখানো পথেই হতে যাচ্ছে মিসরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। মোবারক আমলে আইমান আবদুন নুর নাম মাত্র যেমন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। সেমতেই সেনাদের মতা পাকাপোক্ত করতে সাবেক সেনাপ্রধান আবদুল ফাত্তাহ সিসির বিপরীতে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন বামপন্থী নেতা হামদিন সবাহি। এ ছাড়া সাবেক সব প্রেসিডেন্ট প্রার্থীই আগামী নির্বাচনকে বয়কট করেছেন।
নির্বাচন যাই হোক সিসিই প্রেসিডেন্ট  হবেনÑ দেশজুড়ে এমন প্রচারণায় রাজধানী কায়রোসহ কোথাও নির্বাচনের কোনো আমেজ নেই। স্বৈরশাসনের প্রতিবাদে নোবেল বিজয়ী আল বারাদির কনস্টিটিশন পার্টি, সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আবুল ফুতুহের ইজিপ্ট স্টং পার্টি, ৬ এপ্রিল মুভমেন্ট পার্টি, মুসলিম ব্রাদারহুডসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিােভ চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয় আরো বাড়ছে। মোবারক আমলে নামে মাত্র নির্বাচনে মতা গ্রহণের অভিজ্ঞতা সব মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। অন্য দিকে সাবেক সেনাপ্রধান সিসি মুরসি অপসাণের পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো দিন প্রার্থী হবে না বলে ঘোষণা দেয়ার পরে জাতির সাথে বেঈমানি করে নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ করাকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সর্বত্র আন্দোলন করে যাচ্ছেন। আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। নতুন সংবিধানের মাধ্যমে ভোট গননা প্রকাশ্যে হবে না এমন আইনের নিন্দা ও বাতিলের দাবিতেও বিােভ করছে হামদিন সবাহির সমর্থকেরা।
আল বারাদি দলের একাংশ হামদিন সবাহিকে সমর্থন জানিয়েছে। হামদিন সবাহি গত নির্বাচনে তৃতীয় অবস্থানে ছিলেন। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল জামাল নাসেরের হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন। কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ভিপি তার আদর্শ বাস্তবায়নে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ২৫ জানুয়ারির মোবারক পতন আন্দোলনে ব্রাদারহুডের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাহরির স্কয়ারে আন্দোলন করেছেন। লিবারেল হিসেবে তরুণ প্রজন্মের কাছে তার কিছুটা জনপ্রিয়তা রয়েছে। অন্য দিকে আবদুল ফাত্তাহ সিসিকে মোবারক আমলের সুবিধাভোগী মহল ও তার দলের লোকেরা মতায় বসাতে ব্যাপক তোড়জোড় চালাচ্ছে। মুরসি, ফাইয়ুম, আসওয়ানসহ যেসব এলাকায় বেশি ভোট পেয়েছেন সেই এলাকাগুলোতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। আসওয়ানে দুই গোত্রের মধ্যে গণহত্যার দরুন দেশজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সিনাইতে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে ইসলামপন্থীদের হত্যা, রাবেয়া স্কয়ার ও আল নাহদা স্কয়ারে মুরসি সমর্থকদের হত্যাসহ সর্বত্র খুনের রাজনীতি চালু হয়েছে। ফলে আবারো সেই মোবারক আমলের মতো সেনাদের বন্দুকের মাথায় মতা দখলের সাজানো রাজনীতি শুরু হয়েছে। ইসরাইল সার্বিকভাবে সিসিকে মতায় বসানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও কতেক মিডিয়া প্রচার করছে।
তবে সচেতন সমাজ মনে করছে, ৩০ বছরের শাসক মোবারককে যেভাবে মাত্র ১৭ দিনের মাথায় পতন ঘটানো হয়েছে। সিসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তাকেও সেই একই কায়দায় পতনে বাধ্য করা হবে।

শেয়ার করুন