শওকত হোসেন হিরন আর নেই

0
138
Print Friendly, PDF & Email

বিশিষ্ট রাজনীতিক, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, বরিশাল সদর আসনের আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরন আর নেই। গতকাল বুধবার সকাল ৭টায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে… রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণাগ্রহী রেখে গেছেন। শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ তার মৃত্যুতে ৭ দিনের এবং সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ৩ দিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

গতকাল বিকাল ৪টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শওকত হোসেন হিরনের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে তিনি দলীয় নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে তার সামরিক সচিব পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, উপনেতা, হুইপবৃন্দ, পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাব এবং বিরোধী দলীয় নেতার পক্ষ থেকেও মরহুমের কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। এছাড়াও জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচএম এরশাদ, জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনও তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

শওকত হোসেন হিরনের মরদেহবাহী কফিন সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এসে পৌঁছায় বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে। ৪টায় নামাজে জানাজা হয়। পরে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। নামাজ পড়ান ও মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় সংসদ মসজিদের ইমাম। জানাজা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক। জানাজার আগে মরহুম হিরনের জীবন বৃত্তান্ত পাঠ করেন আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ। পরে পিতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সবার কাছে দোয়া চান হিরনের একমাত্র পুত্র সাজিদ হোসেন রাফসান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধা জানানোর সময় মরহুমের স্ত্রী জেবুন্নেছা আফরোজ ও কন্যা হুসেইন ফাতেমা-ই-রশনিও উপস্থিত ছিলেন।

জাপা চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, জেপি চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ ও সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিন খসরু ও মাহবুব-উল-আলম হানিফ, বন উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রমুখ জানাজায় অংশ নেন। জানাজায় অংশ নিয়ে জেপির পক্ষ থেকে মরহুমের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সময় উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব খলিলুর রহমান খলিল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর রাজু, ছাত্র ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এনামুল ইসলাম রুবেল এবং কেন্দ্রীয় নেতা মিন্টু হাওলাদার ও বাবু প্রমুখ।

পরে ঢাকায় তার মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়। আজ বৃহস্পতিবার ছেলে সাজিদ হোসেন রাফসানের এইচএসসি পরীক্ষা শেষে বেলা দুইটায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে করে মরদেহ বরিশাল নেয়া হবে। বঙ্গবন্ধু উদ্যানে হেলিকপ্টার থেকে তার লাশ নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে পৈত্রিক নিবাস আলেকান্দার হিরন পয়েন্টে। সেখানে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরের দিন শুক্রবার বাদ জুমা সর্বশেষ নামাজে জানাজা শেষে বরিশালের আঞ্জুমান-ই হেমায়েত উদ্দিন মুসলিম গোরস্তানে মা জয়নব বেগমের কবরের পাশে দাফন করা হবে শওকত হোসেন হিরনকে।

গত ২২ মার্চ রাতে বরিশাল ক্লাবের লনে পায়চারী করার সময় আকস্মিক ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান শওকত হোসেন হিরন। তাত্ক্ষণিকভাবে তাকে দ্রুত বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে রাত একটায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। ২৩ মার্চ তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখান থেকে আবার তাকে ঢাকায় ফেরত এনে গত ৪ এপ্রিল অ্যাপোলো হাসপাতালে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে (লাইফ সাপোর্ট) রাখা হয়। গতকাল সকালে তার কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থা খুলে নেয়া হয়।

হিরনের মৃত্যুতে দেশ হারালো দেশপ্রেমিক

এক রাজনীতিবিদকে:রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, তার (হিরন) মৃত্যুতে দেশ একজন দেশপ্রেমিক ও নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিককে হারালো।

তিনি বলেন, বরিশালের উন্নয়নে হিরনের ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। বরিশালের মানুষের জন্য তার ভালোবাসা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। উন্নয়নের স্থপতি হিরনকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বরিশালের মানুষ মনে রাখবে।

রাষ্ট্রপতি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্য এবং বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

অবহেলিত বরিশালকে প্রাচ্যের ভেনিসে

পরিণত করেন হিরন: প্রধানমন্ত্রী

শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যৃতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক শোক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এক সময়ের অবহেলিত বরিশাল শহরকে সাবেক মেয়র হিরন তার আন্তরিকতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রাচ্যের ভেনিসে পরিণত করেছিলেন। বরিশালের উন্নয়নে তার ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। বরিশালের মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা ছিলো অকৃত্রিম। বরিশালের মানুষ তাকে চিরদিন গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হিরনের মৃত্যুতে বরিশাল হারিয়েছে একজন স্বপ্নদ্রষ্টা রাজনীতিবিদকে, উন্নয়নের রূপকারকে। তিনি বলেন, হিরনের মৃত্যুতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হারিয়েছে একজন শক্তিশালী সংগঠককে, দেশ হারিয়েছে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিককে। প্রধানমন্ত্রী মরহুম শওকত হোসেন হিরনের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন, তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং কর্মী, বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

জেপি’র শোক ও দুঃখ প্রকাশ

পরিবেশ ও বন মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও জেপি’র মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম বরিশাল ৫ আসনের সংসদ সদস্য বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনের অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে জেপি নেতৃদ্বয় বলেন, শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুতে দেশ একজন উদীয়মান পার্লামেন্টারিয়ান ও রাজনীতিবিদকে হারালো যিনি তার এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। জেপি নেতৃদ্বয় মরহুমের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। জেপি নেতৃদ্বয় বিবৃতিতে আরো বলেন, মরহুম হিরন জাতীয় পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। জাতীয় পার্টি গভীর শ্রদ্ধা ভরে তার অবদান স্মরণ করছে।

এছাড়া হিরনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বি মিয়া, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, চিফ হুইফ আ স ম ফিরোজ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী মো. শাজাহান খানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বরিশালে দলমত-নির্বিশেষে সবাই কালো ব্যাজ ধারণ করেন। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুল করিম জানান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেন হিরনের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার সাত দিনের শোক ঘোষণা করেছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ।

সংক্ষিপ্ত জীবনী

পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কালীশুরি ইউনিয়নের আড়াইনাও গ্রামের অধিবাসী পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর আব্দুল হাসেম সরদার এবং গৃহিনী জয়নব বেগম দম্পতির ৪ পুত্র ও ৬ কন্যার মধ্যে শওকত হোসেন হিরন তৃতীয়। বরিশাল নগরীর আলেকান্দায় মাতুতলায় ১৯৫৬ সালের ১৫ অক্টোবর শওকত হোসেন হিরন জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকে শুরু করে আজীবন কেটেছে আলেকান্দায়।

১৯৭৩ সালে বরিশাল ল’কলেজ থেকে ‘এলএলবি’ পাস করে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন জাসদ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। ১৯৮৬ সালে যোগ দেন এরশাদের জাতীয় পার্টিতে। মাত্র ২৮ বছর বয়সে দেশের সর্বকনিষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে বরিশাল সদর উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসাবে বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। একই বছর আরো একটি উপ- নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়েছিলেন হিরন।

১৯৯৭ সালে ঐকমত্যের সরকারের শরীক জাতীয় পার্টির মধ্যে বিভক্তি দেখা দিলে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জেপি’র বরিশাল বিভাগের নেতৃত্বে আসেন শওকত হোসেন হিরন। ১৯৯৮ সালে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে বরিশাল সদর আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। চার দলীয় জোট সরকারের পুরো সময় বিরোধী দলের আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথের নেতৃত্ব দেন হিরন। পুরস্কার হিসাবে যোগ্যতার বিবেচনায় ২০০৩ সালে তাকে মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মনোনীত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। অনান্য সাংগঠনিক দক্ষতা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়ে তিনি মহানগরীর ৩০ ওয়ার্ড এবং সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নকে ঢেলে সাজাতে সক্ষম হন। ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয় অর্জন করে মেয়র নির্বাচিত হন। শওকত হোসেন হিরন অনেকটা ব্যক্তি ইমেজকে কাজে লাগিয়েই টানা ৩৫ বছর পর বরিশাল নগর ভবনের মসনদে নিয়ে যান আওয়ামী লীগকে।

২০১২ সালে তিনি সম্মেলনের মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মাঠে ময়দানে ঘুরে বেড়ানো তৃণমূল নেতা-কর্মীদের হূদয়ের নেতা শওকত হোসেন হিরন সর্বশেষ গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সদর আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বরিশাল অফিস জানায়, হিরনের অকাল প্রয়াণের খবর পৌঁছার পর বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ তার মৃত্যুতে ৭ দিনের এবং সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ৩ দিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলা নববর্ষের সকল আয়োজন বাতিল করা হয়েছে।

লাখো মানুষ কাঁদিয়ে এভাবে তার না ফেরার দেশে চলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারছেন না কেউ। তার মৃত্যু সংবাদ বরিশালে পৌঁছামাত্র অনেকটা স্তব্ধ হয়ে পড়ে কর্মচাঞ্চল্যের এ নগরী। দলীয় নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা নগরীর আলেকান্দায় তার বাসভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জড়ো হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

৭ দিনের শোক কর্মসূচি

মহানগর আওয়ামী লীগ ৭ দিনব্যাপী শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। গতকাল বুধবার সোহেল চত্বরে দলীয় কার্যালয়ে এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম।

সভায় দলীয় অফিসসহ সব ওয়ার্ডে কুরআন খানি ও দোয়া-মোনাজাত আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও তারা আজ বৃহস্পতিবার থেকে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু। এছাড়াও কালো ব্যাজ ধারণ, দোয়া মোনাজাত, শোকসভা ও স্মরণসভাসহ নানান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

হিরনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মোহম্মদ ইউনুস এমপি, অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালক অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বরিশাল প্রেসক্লাব, আইনজীবী সমিতি, শিক্ষক সমিতি, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ।

কামরানের শোক

সিলেট অফিস জানায়, বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরন এমপির অকাল মৃত্যুতে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

শেয়ার করুন