অভিযোগ গুরুতর। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জাতীয় সংসদ ভবনের অফিস দখল করে নিয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। তিনি এ নিয়ে সংসদ বর্জন করছেন। হুমকি দিয়েছেন পদত্যাগের।
ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের এ ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর বিস্ময় বোধ করেন সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। এরপর ঘোর কাটলে তিনি বিষয়টি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারকে এ নিয়ে অভিযোগ করেছেন। বিস্মিত হয়েছেন স্পিকার স্বয়ং। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মায়া।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অসুস্থ হয়ে ছিলেন হাসপাতালে। ৪ ফেব্রুয়ারি সংসদের অতিরিক্ত সচিব ও গণপূর্ত বিভাগের এক কর্মকর্তাকে নিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সংসদের নয়তলায় অবস্থিত দক্ষিণ-পূর্ব ব্লকে যান ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মায়া। নিজে উপস্থিত থেকে তিনি সংশ্লিষ্টদের তালা ভাঙার নির্দেশ দেন। তখন কার্যালয়ের সামনে সুরঞ্জিতের নামফলক ছিল।
নিয়ম অনুসারে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছাড়া মন্ত্রীরা সংসদেও একটি কার্যালয় পান। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গত সংসদে প্রথমে আইন বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে যে কার্যালয় পান সেটিই পরে তিনি রেলমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করেন। এরপর দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হয়েও তিনি ওই কার্যালয় ব্যবহার করেছেন।
সপ্তম সংসদে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় প্রধানমন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে ওই কার্যালয় ব্যবহার করেন সুরঞ্জিত।
দশম সংসদে সংসদীয় কমিটি গঠিত না হওয়ায় নতুন করে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। সে কারণে অফিসটি সুরঞ্জিতের নামেই বরাদ্দ রয়েছে। এ সময় অফিসের এমএলএসএস কর্মচারীরা সুরঞ্জিত অফিসটি ব্যবহার করেন বলে জানান তাদের। কিন্তু মায়া বিষয়টিকে পাত্তা দেননি।
এ ঘটনার পর অনেকটা আক্কেল গুড়–ম হবার দশা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের। এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে তিনি একটু তফাতে থাকছেন। এ ব্যাপারে তার বক্তব্য হচ্ছে, ‘এ বিষয়ে মšত্মব্য করে আর নিজেকে ছোট করতে চাই না’।
পুরো ঘটনা অস্বীকার করেছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি বলেন, অফিস কি দখল করে নেওয়ার মতো বিষয়। এটি তো জায়গা জমি নয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি শোনার পর আমি হতবাক। একজনের নামে বরাদ্দ অফিস আরেকজন দখল করে কীভাবে! ভদ্রতা বলেও তো একটা কথা আছে। আসলে আমাদের একে অন্যের প্রতি সম্মান থাকা উচিত।
সংসদের কর্মকর্তারা বলছেন, ঘটনা নজিরবিহীন। সরকারি দলের এক এমপির নামে বরাদ্দকৃত অফিস একই দলের আরেক এমপির দখলের ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি।