২০১৪, সকাল ১১ টা ২০ মিনিট। রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে লাখো কণ্ঠের সম্মিলিত সুরে আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হলো বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত‘আমার সোনার বাংলা’। লাখো জনতার সাথে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী সহ বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সরকারি হিসাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় অংশ নেন ২ লাখ ৫৪ হাজার ৬৮১ জন, যেটা বিশ্ব রেকর্ড। এর আগে গত বছরের ৬ই মে ভারতের সাহারা গ্র“পের আয়োজনে এক লাখ ২২ হাজার মানুষের অংশগ্রহণে সবচেয়ে বেশি মানুষের অংশগ্রহণে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার আনুষ্ঠানিক রেকর্ডটি করে ভারত। কিন্তু ভারতের ওই রেকর্ডটি বাংলাদেশ ভাঙলেও এখনো গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এর অফিসিয়াল পেজেও সবচেয়ে বেশি মানুষের অংশগ্রহণে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার আনুষ্ঠানিক রেকর্ডটির অধিকারী ভারত।
এ ব্যাপারে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, সবচেয়ে বেশি মানুষের অংশগ্রহণে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার আনুষ্ঠানিক রেকর্ডটি ভারতের। বাংলাদেশে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৬৮১ জন মানুষ একত্রে জাতীয় সংগীত গাইবার রেকর্ডের স্বপক্ষে এখনও সরকারের তরফ থেকে কোন প্রমাণাদি বা দলিল গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হয়নি।
লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা গাওয়ার পর সরকারের তরফ হতে বলা হয়েছিল এক সপ্তাহের মাঝেই রেকর্ডটি গিনেজ বুকে ঠাঁই পাবে। কিন্তু গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ এখনো অপেক্ষা করছেন সরকারের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্যে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসেই সারা দেশে ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ কর্মসূচি নিয়ে কর্মতৎপরতা শুরু হয়। শুদ্ধ করে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার জন্য, সঠিক সুরে গাওয়া জাতীয় সংগীতের অডিও রেকর্ড শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। সেই অডিও থেকে সঠিক সুরে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার প্রশিক্ষণ ও মহড়া হয়েছে সারা দেশে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সহায়তায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এই আয়োজনটি বাস্তবায়ন করে।
মূল আয়োজনের আগে ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে ৩ কোটি টাকা নিয়ে এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকদের মাঝে বিতরণ করা খাবারের প্যাকেটে ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালের স্যালাইন সরবরাহের বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। এছাড়াও, অনুষ্ঠানের আয়োজন ব্যয় নির্বাহে সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রায় ৯০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়, যা নিয়েও রয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।
আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক ইতিমধ্যে বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ অনুষ্ঠান নিয়ে কোনো দুর্নীতি হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে পারে দুদক