নিয়ম বহির্ভূতভাবে পটুয়াখালী জুট মিলসকে ঋণ দেওয়ার অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রদীপ কুমার দত্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁর পর পরই চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের ভাই আবুল মাকসুদ মো. ফরহাদের সঙ্গেও কথা বলেন দুদকের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বাহাদুর আলম।
আজ সোমবার সকালে পৌনে ১০টা থেকে প্রদীপ কুমার দত্ত আর দুপুর ১২টা থেকে আবুল মাকসুদ মো. ফরহাদের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেন এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, পটুয়াখালী জুট মিলসের কর্ণধার আ স ম ফিরোজ ও তাঁর আরেক ভাই এ বি এম রেজাকে আজ দুদকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা থাকলেও তাঁরা উপস্থিত হননি। তাঁদের পক্ষ থেকে উপস্থিত হন ভাই মো. ফরহাদ। এ সময় সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছেলে মো. সাকিব।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক কার্যালয় থেকে বের হয়ে সোনালী ব্যাংকের এমডি প্রদীপ কুমার দত্ত সাংবাদিকদের জানান, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের (বর্তমানে বিডিবিএল) অর্থায়নে পটুয়াখালী জুট মিলস লিমিটেড যাত্রা শুরু করে। ১৯৮৯ সালে এই কোম্পানির মালিকেরা ১৭০ দশমিক ৮৭ শতাংশ জমি এবং শিল্প ব্যাংকের কাছে থাকা পুরো প্রকল্প জমি ও নানা রকম যন্ত্রপাতি বন্ধক রেখে সোনালী ব্যাংক থেকে মোট এক কোটি ২০ লাখ টাকার চলতি মূলধন নেয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই চলতি মূলধন ও মেয়াদি ঋণ বাড়তে থাকে। পরে ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার পরে শুরু হয় সোনালী ব্যাংকের সুদ মওকুফ ও পুনঃতফসিল। এভাবে কয়েক দফা সুদ মওকুফ ও সুদবিহীন হিসাবের সুযোগও নিয়েছিল পটুয়াখালী জুট মিলসের মালিকপক্ষ।
২০১০ সালের ১১ অক্টোবর আবারও ঋণটি পুনঃতফসিল ও সুদ মওকুফ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী এ সময় এক কালীন অর্থ জমা দিতে হয়। বিভিন্ন হিসাব শেষে পটুয়াখালী জুট মিলসের এককালীন জমা হিসেব করা হয়েছিল এক কোটি ২২ লাখ টাকা। কিন্তু মালিকপক্ষ শুধুমাত্র ২০ লাখ টাকা জমা দেয়। তাঁদের দেওয়া সব গুলো চেকই প্রত্যাখ্যাত হয়। সর্বশেষ চার কোটি ৫৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকা জমা করার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কিছুই করা হয়নি। ঋণটি বর্তমানে বন্ধ আছে, ঋণের বিপরীতে কোম্পানির পক্ষ থেকে কোনো মালামাল গুদামে নাই। তাই ব্যাংকের শাখা পর্যায় থেকে ঋণটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল।
মো. ফরহাদ বের হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর ভাইদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সবই ভুল তথ্য। তাঁরা আসতে না পারায় তাঁদের পক্ষ থেকে দুদকের সম্মান রক্ষার্থে তিনি এসেছেন।